ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক তালিকার তৃতীয় নাম রিকি পন্টিংয়ের। কিংবদন্তী এই ব্যাটসম্যানকেই ২০০১ সালের বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজেই স্পিন ঘূর্ণিতে ঘোল খাইয়েছিলেন তৎকালীন ভারতীয় তরুণ স্পিনার হরভজন সিং। তাঁর বলে সেই সিরিজের প্রথম ম্যাচে আউট হয়ে নিজের ব্যাটিং কৌশল নিয়েই সন্ধীহান হয়েছিলেন পন্টিং।
প্রস্তুতি ম্যাচের দুর্দান্ত পারফর্মার পন্টিংয়ের দুঃস্বপ্নের শুরু হয়েছিলো সিরিজের প্রথম ম্যাচেই মুম্বাইতে। সে ম্যাচে হরভজনের বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়ে 'শূন্য' রানে ফিরেছিলেন তিনি। সেই থেকে শুরু। সিরিজে ৫ ইনিংস ব্যাটিং করে প্রতিবারই অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিলেন সাবেক এই অধিনায়ক। আর এতেই তিনি নিজের ব্যাটিং কৌশল নিয়ে সন্ধীহান হয়ে পড়েছিলেন।
এ প্রসঙ্গে পন্টিং বলেন, 'আমি ব্যাটিংয়ে গিয়ে ডিফেন্স করলাম, ইনসাইড এজ হয়ে প্যাডে লাগলে শর্ট লেগ ফিল্ডারের ক্যাচ হয়েছিলো। আমি যদিও নিজেকে বুঝিয়েছিলাম আমি খুব বড় ভুল করিনি এবং পরের মুহূর্ত থেকেই নিজের ব্যাটিং কৌশলের উপর থেকে বিশ্বাস উঠে গিয়েছিলো।'
'আমি ভিন্ন উপায়ে খেলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরের ইনিংসেই আমি প্রথম বলেই শূন্য রানে স্টাম্পড হয়ে ফিরে যাই। এবং পরে আমি সুইপ করার চেষ্টা করেছি, ব্যাটের নিচের কানায় লেগে ফিরেছি, শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছি,' তিনি যোগ করেন।
অন্য যেকোন স্পিনারের চেয়ে টেস্টে হরভজন বেশিবার ফিরিয়েছেন পন্টিংকে। যেটির শুরু হয়েছিলো তাঁদের বিখ্যাত ভারত সফর দিয়েই। এমনকি ব্যাটিংয়ে নামার সময় এক পর্যায়ে পন্টিং ভেবেছিলেন তাঁর উপরে জাদু করেছেন এই স্পিনার। যদিও পুরো ক্যারিয়ার জুড়েই হরভজনের বিপক্ষের দ্বৈরথ দারুণ উপভোগ করেছেন তিনি। এমনকি এই স্পিনারকেই সামলানো সবচেইয়ে কঠিন লেগেছে এই অজির কাছে।
মুখোমুখি হওয়া সবচেয়ে কঠিন স্পিনার কে ছিলো এমন প্রশ্নে পন্টিং বলেন, 'সেই নামটি অবশ্যই হরভজন। তার সঙ্গে আমার কিছু অবিশ্বাস্য দ্বৈরথ হয়েছিল। অধিকাংশ সময়েই বড় ফরম্যাটে সে আমার চেয়ে ভালো ছিলো। আমার মনে হয় টেস্টে অন্য যেকোন বোলারের চেয়ে সে আমাকে বেশিবার ফিরিয়েছে।'
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৭ বছরের ক্যারিয়ারে ১৩ হাজার ৭০৪ রান রয়েছে পন্টিংয়ের ঝুলিতে। কিন্তু দুঃস্বপ্নের সেই টেস্ট সিরিজে ৫ ইনিংসে সর্বোচ্চ ১১ রান সহ মোট ১৭ রান করেছিলেন তিনি। হরভজন ঘূর্ণির বিপরীতে নিরুপায় আত্মসমর্পণ করেছিলেন তিনি।