মাশরাফির প্রত্যবর্তন ম্যাচে জয়ের আনন্দ নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি জেমকন খুলনা। শামসুর রহমানের বীরত্বে শেষ ওভারের ৩ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় চট্টগ্রাম। হারতে বসা দলকে ৩০ বলে ৪৫ রানের ইনিংস খেলে জিতিয়েছেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। খুলনার দেওয়া ১৫৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে টপকে যায় চট্টগ্রাম।
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে শুভাগত ঝড়ে ১৫৮ রান স্কোরবোর্ডে জমা করে। জবাবে খেলতে নেমে শুরুর স্লো ব্যাটিংয়ের কারনে কঠিন পরিস্থিতির সামনে পড়তে যাচ্ছিল চট্টগ্রাম! মাশরাফি ও সাকিবের মিলে শুরুতে বেশ ভালো ভাবেই চেপে ধরেন চট্টগ্রামের ব্যাটসম্যানদের। সাকিব নিজের প্রথম ওভারেই ওপেনার লিটনকে তুলে দেন। ফুলার লেন্থের বল মিডঅনে খেলতে গিয়ে বদলি খেলোয়াড় রিশাদ হাসানের তালুবন্দি হন লিটন (৪)।
লিটনের বিদায়ের পর মাঠে নামেন যুব বিশ্বকাপজীয় দলের ব্যাটসম্যান মাহমুদুল হাসান। ১৪ বলে ২৪ রান করে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দেওয়া মাহমুদুলকে এসেই ফিরিয়ে দেন শুভাগত। দলের প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দিতে সৌম্যকে নিয়ে অধিনায়ক মিঠুন চেষ্টা চালান। সৌম্য ২২ বলে ১৯ রান করে আউট হলে জুটি ভাগে তাদের। দুইজনের ৩৩ রানের জুটি প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দিলে তা যথেস্ট ছিল না। মিঠুন ২১ বলে ২৩ রান করে আউট হন। অধিনায়কের আউটের পর হার চোখ রাঙ্গানো চট্টগ্রামকে জয়ে রাঙ্গিয়েছেন শামসুরে চওড়া ব্যাট। ৩০ বলে ৪৫ রানের দূর্দান্ত এক ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন এই ব্যাটসম্যান। ৫ চার ও ১ ছক্কায় শামসুর নিজের ইনিংসটি সাজিয়েছেন।
এদিকে ৮ মাস ২২ দিন পর ২২ গজে বোলিংয়ে নেমে দারুন কিছু করতে পারেনি মাশরাফিঅ প্রথম তিন ওভারে প্রতিপক্ষে ব্যাটসম্যানদের বেশ ভালো ভাবেই আটকে রাখলেও শেষ ওভারে মোসাদ্দেকের ব্যাটে মিড অন দিয়ে বিশাল একটি ছক্কা হজম করতে হয় সাবেক এই অধিনায়ককে। প্রথম স্পেলে ২ ওভারে ১০ রান খরচ করেন মাশরাফি। দ্বিতীয় স্পেলে এক ওভারে দেন ৭ রান। শেষ ওভারে ১১ রান খরচ করে তুলে নেন একটি উইকেট। সবমিলিয়ে ২৮ রান খরচায় মাশরাফির উইকেট একটি। সাকিব আল হাসান ৩০ রান খরচায় নেন দুটি উইকেট। এছাড়া শুভাগত হোম ৩৪ রানে দুটি এবং আল আমিন হোসেন ও হাসান মাহমুদ একটি করে উইকেট নিয়েছেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নামা খুলনার শুরুটা ভালোই হয়েছিল। কিন্তু দলীয় ৩৩ রানে শরিফুলের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন জাকির হাসান (১৫)। তাতেই ঘটে ছন্দপতন। জহুরুল ইসলাম, মাশরাফি মুর্তজা, সাকিব আল হাসানকে দ্রুত হারায় খুলনা। আগের ম্যাচগুলোর মতো এই ম্যাচেও ব্যাট হাতে ব্যর্থ সাকিব, খেলেন ১৬ বলে ১৫ রানের ইনিংস। জহুরুলের ব্যাট থেকে আসে ১৯ বলে ২৬ রানের ইনিংস।স্পিনের বিপক্ষে দ্রুত রান তুলতে চার নম্বরে পাঠানো হয়েছিল মাশরাফিকে। ৮ মাস ২২ দিন পর মাঠে নামা মাশরাফির দুর্ভাগ্য, রান আউট হয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে। সাকিবের সোজা ব্যাটে খেলা শট রাকিবুলের হাতে লেগে স্টাম্পে আঘাত করে, ক্রিজ থেকে বেরিয়ে থাকা মাশরাফি (১) রান আউট। ৬৬ রানে ৪ উইকেট হারানো খুলনাকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন ইমরুল-মাহমুদউল্লাহ। দুজন ৪৩ রান যোগ করলে ১০০ ছাড়ায় স্কোর।
ইমরুল ২৩ বলে ২৪ রান করে বিদায় নিলে সঙ্গী হারিয়ে ফিরে যান মাহমুদউল্লাহও। শরিফুলের বলে ক্লিন বোল্ড হওয়ার আগে ১৭ বলে ২৬ রানের ইনিংস খেলেন খুলনা অধিনায়ক। শেষ দিকে শুভাগত হোমের বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে ১৫৭ রান তোলে খুলনা। ১৩ বলে শুভাগত খেলেন অপরাজিত ৩২ রানের ইনিংস।চট্টগ্রামের বোলারদের মধ্যে ৩৪ রান খরচায় শরিফুল ৩ উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া মোস্তাফিজুর রহমান ৩৬ রানে ২টি এবং মোসাদ্দেক হোসেন ও জিয়াউর রহমান নিয়েছেন একটি করে উইকেট।