নিউজিল্যান্ড সফরে এখনও টসভাগ্য বাংলাদেশের পক্ষে যায়নি। ওয়ানডে সিরিজের তিন ম্যাচেই টস হেরেছিলেন তামিম ইকবাল। এবার হ্যামিলটনের সেডন পার্কে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতেও টস হারলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
আর টসে জিতে ব্যাট হাতে মাঠে নেমেই বাংলাদেশি বোলারদের তুলোধোনা করলেন কিউই ব্যাটসম্যানরা।হ্যামিল্টনের সেডন পার্কে প্রথম টি-২০ ম্যাচে ডেভন কনওয়ের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ভর করে বাংলাদেশকে ২১১ রানের বিশাল লক্ষ্য দেয় কিউইরা। শেষ ৫ ওভারে ৮১ রান সংগ্রহ করে কনওয়ে ও গ্লেন ফিলিপের জুটি।
এ বিশাল লক্ষ্য পাড়ি দিতে পারেননি বাংলাদেশের ব্যাটম্যানরা। কিউইদের ২১১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ১৪৪ রানেই থেমে গেছে বাংলাদেশ। ৬৬ রানে প্রথম টি-টোয়েন্টি হারল সফরকারী টাইগাররা।রানের পাহাড়ে চাপা পড়ে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই সমর্থকদের হতাশ করেছে বাংলাদেশ দল। চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা।ওপেনার মোহাম্মদ নাইমের পর উল্লেখযোগ্য ইনিংস খেলতে পেরেছেন কেবল আফিফ হোসেন।
এ তরুণ অলরাউন্ডারের ব্যাটে ভর করে কোনো মতে দলীয় সংগ্রহ ১০০ পার করে বাংলাদেশ।৫৯ রানেই ৬ উইকেট পড়ে যায় বাংলাদেশের। দলীয় ১৬ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। রানের খাতা খোলার আগেই অধিনায়ক টিম সাউদির বলে ইশ শোধির হাতে ক্যাচ তুলে দেন ওপেনার লিটন দাস।এরপর বালির বাঁধের ন্যায় ভেসে যায় বাংলাদেশের টপ ও মিডল অর্ডার। ২৭ রানে ব্যাট করে সেট হয়ে যাওয়া ওপেনার নাঈমও ফারগুনের এলবিডব্লিউয়ের স্বীকার হন।
এরপর মিঠুন নামলে তার সঙ্গে জুটি গড়তে পারেননি সৌম্য সরকার। স্পিনার ইশ শোধির ডেলিভারিতে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন সৌম্য। রান জমা করতে পারেন মাত্র ৫।এক বল খেলে এক রান নিয়ে মিঠুনকে স্ট্রাইক দেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এটাই যেন কাল হলে দাঁড়াল। ইশ শোধির জোড়া শিকারে পরিণত হন মিঠুন।শোধির গুগলিতে পরাস্ত হয়ে বোল্ড হয়ে যান তিনি। দলীয় সংগ্রহে ৪ রান যোগ করেই সাজঘরের পথে হাঁটেন মিঠুন।
নিজের তৃতীয় ওভারে ফের বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন ইশ শোধি।পর পর দুই বলে তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ ও মেহেদী হাসানকে। মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে আসে মাত্র ১১ রান। আর রানের খাতা খুলতেই পারেননি মেহেদী।স্কোরবোর্ডে ৫৯ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।এমন পরিস্থিতিতে পেস অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুলেন আফিফ।
সপ্তম উইকেটে ৬৩ রানের জুটি গড়েন আফিফ-সাইফ। ৩৩ বলে ৪৫ রান করে হার মানেন আফিফ। তার এই ইনিংসে ৪ বাউন্ডারি ও এক ছক্কার মার ছিল।ফারগুসনের পেসে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন আজকের ম্যাচের সর্বোচ্চ স্কোরার। আফিফ আউট না হলেও অবশ্য লাভ হতো না বাংলাদেশের। কারণ ম্যাচ ততোক্ষণে হাতছাড়া। হামিশ বেনেটের বলে অসাধারণ ক্যাচ নিয়ে শরীফুল ইসলামকে সাজঘরে ফেরান মার্টিন গাপটিল।
শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে ৭৭ রানের। নিশ্চিত হারের ম্যাচে অপরাজিত হয়ে ফেরেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।৩২ বলে ৩০ রান করেছেন এই অলরাউন্ডার। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট ১৪৪ রান সংগ্রহ করতে পারে সফরকারী বাংলাদেশ।অর্থাৎ ৬৬ রানে প্রথম টি-টোয়েন্টি হারল মাহমুদউল্লাহ বাহিনী।এর আগে টসে জিতে ব্যাট হাতে নেমে শূন্য রানে ফেরেন কিউই ওপেনার ফিল এলেন।
সরাসরি তার উইকেট ভেঙে দেন অভিষিক্ত বোলার নাসুম আহমেদ। দুর্দান্ত প্রতাপশালী ব্যাটসম্যান মার্টিন গাপটিলকেও থামিয়ে দেন নাসুম।২৭ বলে ৩৫ রানের ইনিংস খেলে নাসুমের বলে সৌম্যর হাতে ক্যাচ তুলে দেন গাপটিল।দুই ওপেনারকে হারিয়ে বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন তিনে ও চার নম্বরে নামা দুই ব্যাটসম্যান।বিশেষ করে ওয়ানডে সিরিজসেরা ডেভন কনওয়ে বাংলাদেশি বোলারদের ওপর চড়াও হন।৫২ বল খেলে হার না মানা ৯২ রান করেন তিনি। অপরপ্রান্তের ব্যাটসম্যান উইল ইয়ং ৩০ বলে ৫৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন।নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেট হারিয়ে ২১০ রান।