করোনার ভয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর অপেক্ষাকৃত তরুণ ক্রিকেটারদের নিয়ে বাংলাদেশ সফরে এসেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। গত রবিবার ঢাকায় পা রাখলেও এখনো অনুশীলন শুরু করতে পারেননি তারা। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে অনুশীলনে ফিরবেন তারা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জুমে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স। প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ ছাড়াও নবীন খেলোয়াড়দের নিয়ে নিজেদের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন সিমন্স।
প্রশ্ন: অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের সফর না আসাটা ভুল ছিল কিনা?
সিমন্স: আমি বলতে পারবো না, এটি তাদের ভুল সিদ্ধান্ত ছিল কিনা। সবারই ব্যক্তিগত চিন্তা-ভাবনা থাকে। তারা তাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি আমার নিজের বাদে, অন্য কারও ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। আমাদের খেলোয়াড়দের সফরে যাওয়া কিংবা না যাওয়ার ব্যাপারে শুরু থেকেই স্বাধীনাত দেওয়া হয়েছিল। কেউ কেউ প্রথম সিরিজে যায়নি, কেউ কেউ দ্বিতীয় সিরিজে এবং কেউ কেউ এই সিরিজে। আমার মনে হয় প্রত্যেকের এই সিদ্ধান্তের জন্য ভিন্ন ভিন্ন কারণ রয়েছে। আমি কাউকে একটি সফরে না যাওয়ার জন্য বিচার করতে পারবো না।
প্রশ্ন: করোনার এই সময়টাতে দুটি অ্যাওয়ে সিরিজ খেলছেন, খুব কঠিন কীনা?
সিমন্স: আমাদের কারো জন্যই এরকম সময়ে নিজ দেশ থেকে দূরে থাকা সহজ নয়। কিন্তু একই সময়ে আমরা যে দুটি সিরিজ খেলেছি সেখানে আমরা পূর্ণ এফোর্ট দিয়েছি। প্রস্তুতিও দারুণ ছিল। আমরা যেরকম ফলাফল চেয়েছিলাম তা হয়ত পাইনি কিন্তু আমরা আমাদের পুরো চেষ্টা করেছি এবং সেটা এই সিরিজেও একই থাকবে।
প্রশ্ন: করোনা প্রোটোকল মেনে চলাটা কতটা কঠিন মনে হচ্ছে?
সিমন্স: প্রোটোকল এখন পর্যন্ত ভালোই আছে। প্রথম তিন দিন আমরা আমদের রুমেই আছি। আমাদেরকে সকালের নাস্তা, দুপুরের এবং রাতের খাবার রুমেই দেয়া হয়েছে। আমরা বাকি যে দুই দেশে সফর করেছিলাম সেখানেও একই প্রোটোকল ছিল। আমরা ইংল্যান্ডে কোন নিয়ম ভাঙিনি, নিউজিল্যান্ডে দুটি লঙ্ঘন ঘটেছিল। আপনি সময়ের সাথে সাথে শিখেন। আমার মনে হয় জৈব নিরাপত্তা বলয়ের ক্ষেত্রে আমরা অন্যতম অভিজ্ঞতাসম্পন্ন দল, যেহেতু আমরা ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ডের পর এখানে এসেছি। আমরা জানি এখানে প্রথম ধাপ পার করার পরও আমাদের প্রোটোকল মেনে চলতে হবে। আমাদের যথাসম্ভব দূরত্ব মেনে চলতে হবে। ভিন্ন জায়গা, ভিন্ন নিয়ম, কিন্তু বিষয়টি হলো সবাইকে নিরাপদ রাখা।
প্রশ্ন: নতুন দল। ওয়ানডের ব্যাটিং অর্ডার সাজানো আপনার জন্য কঠিন হয়ে গেলো কিনা?
সিমন্স: দশের মধ্যে নয়বারই অনুশীলনে কি দেখছি সেটার ভিত্তিতে সাজানো হবে। অধিনায়ক আছে মিডল অর্ডার অথবা লেট মিডল অর্ডারে। আমরা তাঁর আশেপাশেই দলের ভারসাম্য দাঁড় করাতে চাইব। নির্ভর করছে আমরা অনুশীলনে কেমন করছি। এখানকার কন্ডিশনে কে কেমন থাকে, সেটিও দেখা হবে। আমরা মূল মাঠের পাশের মাঠেই অনুশীলন করব। কন্ডিশন কেমন থাকে সেটাও দেখা হবে। দেখি শুরুটা কেমন হয়।
প্রশ্ন: নতুনদের কাছে আপনার প্রত্যাশা কী?
সিমন্স: প্রথমত পারফরম্যান্স। হয়তো একটা ম্যাচ জয়ের জন্য ফিফটি দরকার, এটাই হয়তো বড় সাহায্য করবে ম্যাচ জিততে। কারণ দল জিতেছে আর আপনি জেতায় বড় ভূমিকা রেখেছেন। মানসিকতা ও পারফরম্যান্স, আপনি এটাই দেখতে চান যখন দলে নতুন কেউ আসে।
প্রশ্ন: সামনে ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অনেক খেলা, এই সিরিজ কী দলের পুল বাড়াতে সাহায্য করবে কিনা?
সিমন্স: ঠিক বলেছেন। আমরা ইংল্যান্ডে ২৫ জন ক্রিকেটার নিয়ে গিয়েছিলাম। আমরা সেখানে কয়েকজন তরুণ ক্রিকেটারকে দেখতে পেয়েছিন যাদের নিউজিল্যান্ডে অভিষেক হয়েছে। সেই সফরে আমরা কয়েকজনকে দেখেছি যাদের আমরা আগে থেকে জানতাম না। আগেই বলেছি, কিছু জায়গা আছে যা দখল করা ক্রিকেটারদের হাতে। এখানে ভালো করলে সামনের সিরিজেও তাদের নিয়ে ভাবা যাবে।
প্রশ্ন: বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ দিয়েই কী ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু হচ্ছে?
সিমন্স: এটাই বিশ্বকাপের প্রস্তুতির শুরু। বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করার শুরুটা এখান থেকেই হচ্ছে। সফরে যারা আছে তাঁরা এখানে অন্যের জায়গা পূরণ করতে আসেনি, এটা তাদের জন্য সুযোগ। দলে জায়গা দখল করার সুযোগ। সব ক্রিকেটারের প্রতি আমার এই বার্তাটা থাকবে। এখানে যদি তিনটি ওয়ানডে ও দুটি টেস্টে ভালো করেন, তাহলে আপনি নিজেকে এমন জায়গায় নিয়ে গেলেন যেখানে কেউ আপনাকে সরাতে পারবে না। এই সুযোগটা শুধু আপনারই।