My Sports App Download
500 MB Free on Subscription


ক্রিকেটে ফেরার আনন্দে উদ্বেলিত তারা

সেই মার্চে, মেলবোর্নে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একসঙ্গে হয়েছিলেন সালমা-রুমানা-জাহানারা-জ্যোতিরা। এরপর দেশে ফিরে করোনা আতংকে গৃহবন্দি হয়ে পড়েন তারা। অবশেষে দীর্ঘ অপেক্ষা ফুরাচ্ছে নারী ক্রিকেটারদের। প্রায় দশ মাস পর নতুন বছরের শুরুতেই সবুজ ঘাসে পা রাখতে যাচ্ছেন তারা। ব্যক্তিগত ভাবে এতোদিন অনুশীলন করলেও একসঙ্গে ক্রিকেটে ফেরার আনন্দে রোমাঞ্চিত দলের প্রত্যেক ক্রিকেটার। এখন কেবল অপেক্ষায় করোনা পরীক্ষার ফলাফলের। ফলফলা নেগেটিভ হলেই সদলবলে পুরো দল রবিবার সকালের ফ্লাইটে সিলেটে চলে যাবে।

করোনার বেশিরভাগ সময় শেরপুরে কাটিয়েছেন নিগার। অস্ট্রেলিয়াতে বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে মিরপুরে কিছুদিন অনুশীলন করেছিলেন তারা। দীর্ঘ দশ মাস পর মিরপুরের মাঠে ফিরে দারুন শিহরিত উইকেট কিপার এই ব্যাটার। সবার সঙ্গে মিলে ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার খবরে আনন্দ যেন ধরে না ২৩ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারের।আলাপকালে নিগার জানালেন সেই অনুভূতি, ‘প্রথমত ক্রিকেটে ফিরতে পারছি এটাই সবচেয়ে সুখের খবর। বছরের প্রথম থেকেই আমরা ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত হতে পারছি, সেটি আমাদের জন্য আনন্দের ব্যাপার। সব মিলিয়ে আমরা সবাই দারুন রোমাঞ্চিত। ব্যক্তিগত ভাবে যতই অনুশীলন করি না কেন, দলীয় অনুশীলনে সেই অনুভূতিটা থাকে অন্যরকম। উপভোগটাও বেশি করা যায়, অনুশীলনটাও ভালো হয়। ঢাকার বাইরে আমরা যারা ছিলাম, তারা ব্যক্তিগত অনুশীলন করলেও সুযোগ সুবিধা তেমন পাইনি। সেই ভাবনা থেকে আমি খুবই রোমাঞ্চিত। সিলেটে ভালো সুযোগ সুবিধায় আমরা অনুশীলন করতে পারবো।’

দীর্ঘ ১০ মাসের বিরতি এক মাসের ক্যাম্প দিয়ে যতটুকু সম্ভব পুষিয়ে নেওয়ার ভাবনা ক্রিকেটারদের। নিগার জানালেন, ‘এটাতো আসলে পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। কয়েক মাস হলে কথা, সেই ফেব্রুয়ারিতে আমার খেলেছিলাম। এরপর ব্যক্তিগত কিছু অনুশীলন করলেও সেটি কোন মতেই যথেস্ট ছিল না। তবে আগের অবস্থায় না ফিরলেও কিছুটাতো উন্নতি হবেই। আমাদের আসলে ফিটনের উন্নতি করতে হবে। স্কিল অনুযায়ি হয়তো কিছুটা সময় লাগবে। যদি আমার ফিটনেস নিয়ে বেশি কাজ করতে পারি। তাহলে স্কিলটাতে দ্রুত উন্নতি করতে পারবো।’ব্যক্তিগত নিগার খুব পিছিয়ে নেই বলেই জানালেন, ‘বিসিবি যখন থেকে আমাদের ব্যক্তিগত অনুশীলন সুযোগ করে দেয়, তখন থেকেই আমি ব্যক্তিগত কাজগুলো করেছি। ক্যাম্প শুরু হওয়ার পর আমার আসল অবস্থাটা আমি বুঝতে পারবো। তবে আমার কাছে মনে হয় না আমি অনেক বেশি পিছিয়ে থাকবো। যেহেতু কাজ করেছি লগডাউনের সময়টাতে। যত দ্রুত সম্ভব পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অনেকদিন হয় উইকেটে ব্যাটিং করা হয় না। কোন ম্যাচ খেলা হয় না। যতই আমরা অনুশীলন করি না কেন, ম্যাচের টেম্পারম্যান্ট আর অনুশীলনের টেম্পারমেন্ট এক নয়। এদিকটা যতটুকু সম্ভব মানিয়ে নেওয়া।’

টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সালমতো সতীর্থদের পেয়ে দারুন খুশি। শনিবার বেশিরভাগ সময় সবার সঙ্গে আড্ডা দিয়েই কাটিয়েছেন তিনি, ‘অনেক ভালো লাগছে। গতকাল (শুক্রবারÑ আসার পর সবার সাথে দেখা হয়নি। তবে আজ সকালে মোটামুটি অনেকের সঙ্গে দেখা হয়েছে। সবাই আমাকে অভিনন্দন জানাচ্ছিল। যেহেতু আমি উইমেন্স টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জ খেলে এসেছি। প্রায় এক বছর পর আমরা সবাই একসঙ্গে হলাম, ভালো লাগছে। ক্যাম্প শুরু হচ্ছে, সবার সঙ্গে দেখা হচ্ছে, মজা হচ্ছে; এ কারণে সবাই খুব খুশি ও আনন্দিত। ‘অন্য ক্রিকেটারদের চেয়ে ব্যতিক্রম ছিলেন সালমা। এর মধ্যেই ওমেন্স টি- চ্যালেঞ্জে খেলে এসেছেন তিনি। নিজে ম্যাচের মধ্যে থাকলেও এক মাসের ক্যাম্প ঘাটতি পূরণের জন্য যথেস্ট নয় বলেই মনে করছেন তিনি, ‘না, এই এক মাসে গ্যাপ পূরণ করা আসলে সম্ভব নয়। আমরা নিজেদের মতো করে সবাই নিজের বাসায় টুকটাক অনুশীলন করেছি বিরতির সময়ে। কোরবানির ঈদের পরে সবাইকে অনুমিত দেওয়া হয়েছে একক অনুশীলনের। তো সবাই কম বেশি অনুশীলন করেছি। তবু যে ঘাটতি থাকবে না এটা বলব না। ঘটতি অবশ্যই থাকবে। কারণ এক সাথে অনুশীলন করা আর একক অনুশীলন করা পুরোপুরি ভিন্ন। আমরা চেষ্টা করব দ্রুত ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য।’

এদিকে অলরাউন্ডার রুমানা আহমেদ পুরনো বছরের আক্ষেপ ভুলে যেতে যান নতুন বছর মাঠে ফেরার আনন্দে, ‘সবচেয়ে আনন্দের ব্যাপার হচ্ছে এতদিন পর মাঠে ফিরতে পারছি। এ কারণে অনেক খুশি। গত বছরে আমাদের অনেক প্রত্যাশা ছিল। কারণে অনেক খেলা ছিল, আশা ছিল অনেক কিছু করব। কিন্তু পরিস্থিতি যেহেতু খারাপ হয়ে গেছে, আমরা আক্ষেপ রাখতে চাই না। আমরা খুবই খুশি যে সবাই একসাথে অনুশীলন করব, এটার মজাই আসলে আলাদা। ক্যাম্পে যোগ দিতে পেরে আমরা সবাই আনন্দিত।’নিগার ও সালমার মতো এই ক্যাম্পকে ঘাটতি পূরণের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিতে চান রুমানা, ‘সত্যি বলতে দীর্ঘ এক বছরের বিরতি এক মাসের ক্যাম্প দিয়ে পোষানো সম্ভব নয়। এতদিনের বিরতি এত অল্প সময়ে পুষিয়ে নেওয়া যায় না। তারপরও যতটুকু সম্ভব, আমরা নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করব পুষিয়ে নেওয়ার। সবাই কম বেশি অনুশীলন করেছে। যদিও ক্যাম্পের অনুশীলন আর একক অনুশীলনের মধ্যে অনেক তফাৎ। শুরুতে হয়তো আমরা কিছুদিন ফিটনেস নিয়ে কাজ করবো। ফিটনেসে উন্নতি করতে পারলে স্কিলেও উন্নতি করা যাবে।’

  •