চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনে মেহেদি হাসান মিরাজের টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি ও নাঈম হাসান-তাইজুল ইসলামদের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে বড় সংগ্রহ গড়েছে বাংলাদেশ দল।
প্রথম ইনিংসে যতটা সম্ভব রান তুলে নেওয়ার লক্ষ্যে লাঞ্চের পরে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ দল, সেই লক্ষ্যে তাদের সফলই বলা যায়। লাঞ্চ থেকে ফিরেই ফিফটি তুলে নেন ৪৬ রানে অপরাজিত থাকা মেহেদি হাসান মিরাজ, ৮ম উইকেটে তাইজুল ইসলামকে নিয়ে ৪৪ রান যোগ করেন তিনি। ৭২ বলের ধৈর্য্যশীল ইনিংসে ১৮ রান করেন তাইজুল।৩৫৯ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর ৪০০ রান করা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিলেও নাঈম হাসানকে নিয়ে কঠিন সেই পথ ঠিকই পাড়ি দিয়েছেন মিরাজ, দুজনে গড়েন ৫০ রানের জুটিও। নিয়মিত বোলাররা যখন ব্যর্থ হচ্ছিলো তখন ক্যারিবিয়ান শিবিরে স্বস্তি ফেরান অভিষিক্ত এনক্রুমাহ বোনার। নাঈমকে ফিরিয়ে ভাঙেন ৭৬ বলে ৫৭ রানের জুটি।
৭৬ বলে ৬ চারে ২৪ রান করা নাঈম হাসান ফিরে গেলে মিরাজের সেঞ্চুরি নিয়ে দেখা দেয় অনিশ্চিয়তার, তবে নিজের দিনে সুযোগটাকে হাতছাড়া করেননি তিনি। মুস্তাফিজুর রহমানকে সাথে নিয়ে পুরণ করেছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি, পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে টেস্টে ৫ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি সেঞ্চুরির কৃতিত্ব গড়েছেন মিরাজ।সেঞ্চুরির পর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মিরাজ, পরিস্থিত্তির দাবী মেটাতে গিয়ে রাকিম কর্নওয়েলকে ছক্কা মারতে গিয়ে কাভিম হজের হাতে ধরা পড়েন তিনি। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ১৬৮ বলে ১৩ চারে ১০৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন মিরাজ, বাংলাদেশ দলের ইনিংস থামে ৪৩০ রানে।
সাকিব আল হাসানের ৬৮ রানের পাশাপাশি সাদমান ইসলাম ৫৯, মুশফিকুর রহিম ৩৮ ও লিটন দাসের ব্যাট থেকে আসে ৩৮ রানের ইনিংস, ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ১৩৩ রান দিয়ে ৪ উইকেট পেয়েছেন জোমেল ওয়ারিকান, ১১৪ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন আলোচিত স্পিনার রাকিম কর্নওয়েল।এর আগে দ্বিতীয় দিনের শুরুটা ভালো পেয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজই, আগের দিনের অপরাজিত থাকা লিটন দাসকে ফিরিয়ে নিজের চতুর্থ উইকেট তুলে নেন জোমেল ওয়ারিকান। তৃতীয় ওভারেই উইকেট হারালেও নিয়ন্ত্রণটা দ্রুতই নিজেদের দিকে নেন সাকিব আল হাসান, নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার ম্যাচেই তুলে নেন ফিফটি।
ষষ্ঠ উইকেটে মেহেদি হাসান মিরাজকে নিয়ে যোগ করেন ৬৭ রান, সাকিবের পরিশ্রম আর একাগ্রতা মেশানো ইনিংসটি থামে ৬৮ রানে। ৩১৫ রানে ৭ উইকেট হারানো বাংলাদেশ আর কোন উইকেট নান হারিয়ে ৩২৮ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায়, প্রথম সেশনে ১ টি করে উইকেট নেন ওয়ারিকান ও রাকিম কর্নওয়েল।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
বাংলাদেশ ৪৩০/১০ (সাদমান ইসলাম ৫৯, মুশফিকুর রহিম ৩৮, সাকিব আল হাসান ৬৮, লিটন দাস ৩৮, মেহেদি হাসান মিরাজ ১০৩, নাঈম হাসান ২৪, জোমেল ওয়ারিকান ৪/১৩৩, রাকিম কর্নওয়েল ২/১১৪, এনক্রুমাহ বোনার ১/১৬)।