ক্যান্ডি টেস্টে শ্রীলঙ্কান অভিষিক্ত স্পিনার প্রবীণ জয়বিক্রমার দাপটে বাংলাদেশ ২৫১ রানেই গুটিয়ে যায়। মুমিনুলদের প্রথম ইনিংসের এই ব্যর্থতা পরাজয় চোখ রাঙ্গাচ্ছে। তৃতীয় দিনের শেষেই বোঝা গিয়েছিল বাংলাদেশের হাত থেকে কার্যত ম্যাচটি বেরিয়ে গেছে। চতুর্থ দিনে সেটি আরও স্পষ্ট হলো। জিততে হলে মুমিনুলদের পাল্টাতে হবে ১৪৪ বছরের ক্রিকেট ইতিহাস।
২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪১৮ রানের টার্গেট ছুঁয়েছিল ক্যারিবীয়রা। ওটাই এখন পর্যন্ত টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। ফলে ক্যান্ডিতে দ্বিতীয় টেস্টটি জিততে হলে এশিয়ার মাটি তো বটেই, টেস্ট ইতিহাসে ১৪৪ বছরের রেকর্ড পাল্টে দিয়েই জিততে হবে মুমিনুলের দলকে। জয়ের জন্য যে বাংলাদেশকে ৪৩৭ রানের লক্ষ্য দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। টেস্টে এত রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নেই। এমন অসম্ভব লক্ষ্যই তাড়া করতে হবে তামিম-মুশফিকদের।আরেকটি পরিসংখ্যানও বাংলাদেশ দলকে হতাশ করবে। টেস্ট ক্রিকেটে ২২০ প্লাস রান তাড়া করে জেতার কোন ইতিহাস নেই বাংলাদেশের। ২০০৯ সালে দ্বিতীয় সারির ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২১৭ রান তাড়া করে হারিয়েছিল লাল-সবুজরা। এছাড়া দেশের শততম টেস্টে শ্রীলঙ্কার মাটিতে ১৯১ রান তাড়া করে জিতেছিল বাংলাদেশ।
পরিসংখ্যান বলছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি রান তাড়ার রেকরর্ডটি ৩৭৭ রানের। কিন্তু সেটিও বর্তমান টার্গেটের চেয়ে কম। ২০১৫ সালে পাল্লেকেলেতে শ্রীলঙ্কার দেওয়া ৩৭৭ রান তাড়া করে জিতেছিল পাকিস্তান। এছাড়া শারজাতে শ্রীলঙ্কার দেওয়া ৩০২ রান তাড়া করে ২০১৪ সালে পাকিস্তান জিতেছিল। ক্যান্ডিতেই ২০০১ সালে ভারতকে ২৬৪ রানের লক্ষ্য দিয়ে শেষ রক্ষা হয়নি স্বাগতিকদের। ও্ই ম্যাচটি জিতে নেয় ভারত।ক্যান্ডির উইকেট ইতিমধ্যে টার্ণিং হয়ে উঠেছে। বল যে দিকে সে দিকে ঘুরছে, আচমকা নিচু হয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে মুমিনুলদের সামনে ম্যাচ জেতার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। শুধু ক্রিকেট ইতিহাস নয়, ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরাও মনে করছেন, এই পিচে ৪৩৭ রান তাড়া করে জেতা অসম্ভব।
ক্যান্ডিতে দ্বিতীয় টেস্টে টস জিতে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা ৭ উইকেট হারিয়ে ৪৯৩ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে। জবাবে খেলতে নেমে ২৫১ রানেই অলআউট হয় মুমিনুল বাহিনী। ২৫৯ রানে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ ফলোঅনে পড়লেও স্বাগতিকরা আর সেটি না করিয়ে নিজেরাই দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেছে। মেহেদী মিরাজ আর তাইজুল ইসলামের স্পিন ঘূর্ণির সামনে দ্বিতীয় ইনিংসে খুব বেশি কিছু করতে পারেনি স্বাগতিকরা। ৪৩৬ রান করে ইনিংস ঘোষণা দিলে বাংলাদেশের জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৩৭ রানের। এই রান তাড়া করে জিততে গেলে ১৪৪ বছরের ক্রিকেট ইতিহাসটা পাল্টাতে হবে মুমিনুলদের!