পুরো টুর্নামেন্টে ব্যাটিংয়ে ভুগেছে জেমকন খুলনা। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় আরও একটি হার সঙ্গী হলো খুলনার। বৃহস্পতিবার রবিউল ইসলাম রবির স্পিন জাদুতে মুশফিকের ঢাকার বিপক্ষে ২১ রানে হেরেছে মাহমুদউল্লাহ খুলনা। আগে ব্যাটিং করা ঢাকা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৯ রান করে। জবাবে ১৯.৩ ওভারে ১৫৯ রানে অলআউট হয় খুলনা।
নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ দিয়ে মাঠে ফিরেছেন সাকিব। বিশ্বসেরা এই ক্রিকেটারকে নিয়ে প্রত্যাশা থাকলেও সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হন সাকিব। তার ব্যাটিং ব্যর্থতাই বেশি ভোগাচ্ছে খুলনাকে। এতোদিন ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ হলেও বোলিংয়ে মোটামুটি ভালোই করছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার বল হাতে ব্যর্থ হওয়ার পর ব্যাটিংয়েও হতাশ করেছেন সাকিব। খেলেছেন ৭ বলে ৮ রানের ইনিংস। দলের টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় ১৫৬ রানেই থেমে যেতে হয় খুলনাকে।
ইনিংসের শুরুতেই রবিউলেল ঘূর্ণির কাছে পরাস্ত হন ওপেনার জাকির (১)। এরপর সাকিবের বিদায়ে আরও কঠিন পরিস্থিতির তৈরি হয়। রবিউলের বলে বাজে শট খেলে থার্ডম্যানে সহজ ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন সাকিব(৭)। তৃতীয় উইকেটে জহুরুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ৪৮ রানের জুটি গড়েন। ২৬ বলে ২৩ রান করে মাহমদুউল্লাহর বিদায়ে আরেকটি হার চোখা রাঙ্গাচ্ছিল খুলনার। সেই সম্ভাবনা আরও জোড়ালো করে মাশরাফি ও আরিফুলের আউটে।
হুট করে শামীম হোসেনের ৯ বলে ২৪ রানের ঝড়ো ইনিংসে আশার আলো দেখে খুলনা। শেষ পর্যন্ত আলো, অন্ধকারে রূপ নেয়। ৩ বল বাকি থাকতে ১৫৯ রানে অলআউট হয় খুলনা।ঢাকার বোলারদের মধ্যে টুর্নামেন্টের প্রথম ৫ উইকেট তুলে নেন রবিউল ইসলাম। এই স্পিনার ৩.৩ বলে ২৭ রান খরচায় তুলে নেন ৫ টি উইকেট। এছাড়া রুবেল হোসেন ৩০ রানে দুটি, মুক্তার আলী ৩৫ রানে দুটি এবং নাসুম আহমেদ ২৮ রানে একটি উইকেট নেন। টস হেরে আগে ব্যাটিং করা ঢাকার শুরুটা হয়েছিল দারুন। ওপেনিং জুটিতে ৪১ রানের উপর ভর করে দারুন সংগ্রহ পায় মুশফিকের দল। সাকিব আল হাসানের প্রথম ওভারে চার ছক্কায় নাঈম নিজের ৩৬ রানের ইনিংসটি সাজিয়েছেন। শহীদুলের বলে আউট হওয়ার আগে ১৭ বলে ৫ ছক্কায় নাঈম নিজের ইনিংসটি গড়েছেন। নাঈমকে হারিয়েও ঢাকার রানের চাকা সচল ছিলো সাব্বির-আল আমিন জুনিয়রের জুটিতে।
পেসার মেহেদী হাসান রানার বদলে টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো সুযোগ পান আল আমিন জুনিয়র। তিন নম্বরে নেমে খেলেন ৩৬ রানের দূর্দান্ত এক ইনিংস। ২৫ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় আল আমিন নিজের ইনিংসটি সাজিয়েছেন। আল আমিনের বিদায়ের পর দ্রুত ফিরে যান মুশফিকুর রহিম (৩) ও ইয়াসির আলী (০)। ব্যর্থতার কারনে দুটি ম্যাচে একাদশের বাইরে ছিলেন সাব্বির। বৃহস্পতিবার ওপেনিং সুযোগ পেয়েই টুর্নামেন্টের প্রথম হাফসেঞ্চুরিটি তুলে নিয়েছেন। পঞ্চম উইকেটে আকবর আলীকে সঙ্গে নিয়ে ৪২ রানের জুটি গড়েন। নাজমুল অপুকে ১ ওভারে আকবরের ৪ ছক্কা হজম করতে হয়েছে। ১৪ বলে ১ চার ও ৪ ছক্কায় ৩১ রান করে আউট হন যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক।
আকবর ফিরে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর আউট হন সাব্বিরও। আউট হওয়ার আগে খেলেন ৩৮ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৬ রানের ইনিংস। সবমিলিয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৯ রান স্কোরবোর্ডে জমা করতে সমর্থ হয় ঢাকা।খুলনার বোলারদের মধ্যে শহীদুল ৩১ রান দিয়ে দুই উইকেট নিয়ে দলের সবচেয়ে সফল বোলার। সাকিব ৩ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে দলের সবচেয়ে খরুচে বোলার। বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল অপু ৪ ওভারে ৫১ রান খরচ করে নিয়েছেন একটি উইকেট। এছাড়া হাসান মাহমুদ ২৩ রানে একটি এবং মাশরাফি ২৬ রানে একটি উইকেট নিয়েছেন।