গত বছর ১৬ক্রিকেটারকে নিয়ে কেন্দ্রীয় চুক্তি করেছিলো বাংলাদেশ ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিসিবি। চুক্তিতে কিছুটা নতুনত্বও এনেছিল তারা। সীমিত ওভারে ও বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটের জন্য আলাদা আলাদা ক্যাটাগরি করা হয়েছিল। এবার কেন্দ্রীয় চুক্তিতে আরও কিছু বিষয় যুক্ত করার কথা জানালেন বিসিবি সভাপতি।
নিষেধাজ্ঞার কারনে এমনিতেই গত বছরের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ছিলেন না সাকিব। এবার চুক্তিতে ফেরার সুযোগ থাকলেও সেটি আআর হচ্ছে না! এপ্রিলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ বাদ দিয়ে আইপিএলে পুরো মৌসুমের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। সাকিবের এমন সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে জুনিয়র ক্রিকেটারদের জন্যও নেতিবাচক বার্তা দিতে পারে। এই কারনে নতুন কেন্দ্রীয় চুক্তিতে বেশ কিছু বিষয় যুক্ত করার কথা ভাবছে বিসিবি।
সংবাদ মাধ্যমকে সোমবার বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান বলেছেন, 'আমরা আজ এই ব্যাপারেও আলোচনা করেছি, আমরা ওদের (জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সাথে) সাথে একটা চুক্তি তৈরি করব। আমরা এখনো এবার কোন চুক্তি করিনি তো। নতুন এই চুক্তিতে নতুন কিছু জিনিস যুক্ত হবে। ওখানে পরিস্কারভাবে লেখা থাকবে, যে কে কোন ফরম্যাট খেলতে চায়, তাদেরকে বলতে হবে। এবং এটাও জানতে হবে তাদের যদি ওই সময়ে অন্য কোন খেলা থাকে, তাহলে সেখানে খেলবে নাকি দেশের হয়ে খেলবে। এই চুক্তিতে যারা সই করবে তাদের তো আমরা তখন যেতে দিব না।'
আগে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত থাকলেও এখন চুক্তির মাধ্যমে বিষয়টি আগেই পরিষ্কার করতে চাইছে বিসিবি, 'এখন ব্যাপার টা ওপেন। আগে এটা ছিল ইনডিভিজুয়ালের ওপরে, এখন আমরা কাগজে কলমে লিখিত নিয়ে নিব। কারও বলার কিছু থাকবে না, যে দিল না, জোর করে যাচ্ছে-এসব বলার কিছু থাকবে না। এটাই মেনে নিতে হবে- যে খেলবে না, সে খেলবে না।'ক্রিকেটারদের জোর করে না খেলানোর বিষয়টি কী দীর্ঘমেয়াদী হবে কিনা এমন প্রশ্নে বিসিবি সভাপতি বলেছেন, 'একদম লং টার্ম। কোন সিরিজের সাথে আর কিছু নাই। কারণ এটা আমদের চিন্তাই আসেনি কখনো। এতগুলো ম্যাচ হারার পরে প্লেয়ারদের উচিত বিশেষ করে সিনিয়রদের চিন্তা থাকবে যে না আমরা পরবর্তী টেস্ট ম্যাচ জিতবো। এটা না হয়ে যদি বলে আমি খেলবো না তাও ব্যক্তিগত কোন ব্যাপার না। আরেকটা ফ্র্যাঞ্চাইজি খেলার জন্য। তখন এটা ভেরি ক্লিয়ার যে এদের দিয়ে টেস্টে ভালো কিছু হবে না।'
টেস্ট ক্রিকেটের ব্যাপারে সাকিবের অনীহা বেশ পুরনো। বিষয়টি উল্লেখ করে বোর্ড সভাপতি বলেছেন, ' সাকিবকে কি খেলানো যাবেনা জোর করে? ওকে ছুটি না দিলে কি করতো? হয়তো খেলতো। কিন্তু আমরা এটা চাইনা। আমরা চাই যারা খেলাটাকে ভালোবাসে তারাই খেলুক। জোর করে আমি খেলাতে চাইনা। সাকিব তো আরও তিন বছর আগেই খেলতে চায়নি টেস্টে। ওতো এমনিতেই টেস্টের প্রতি অত আগ্রহ দেখায়নি। চাচ্ছিল না খেলতে। তখন তো ওকে টেস্ট অধিনায়ক করে দেওয়া হল। জোর করেতো চেষ্টা করলাম। কিন্তু আসলে জোর করে খেলানোর মানে হয়না। আমার মনে হয় তাতে করে আমরা ভবিষ্যতে আগাতে পারবো না, পেছনের দিকে যাচ্ছি। এখন সবার জন্য যদি ফ্রি থাকে ওপেন থাকে, কাউকে জোর করবো না। আমরা যখন জানবো এই কয়জন প্লেয়ার চায়না টেস্ট খেলতে, তখন তো তাদের বিকল্প নিয়ে চিন্তা করতে পারবো। হয়তো ক বছর বা দেড় বছর সময় লাগবে, লাগুক। কিন্তু ভবিষ্যতের জন্য আমাদেরই ভালো হবে।'
দল গঠন কঠিন হবে কিনা? এমন প্রশ্নে নাজমুল হাসান বলেছেন, 'কোন অসুবিধা হবে না। চুক্তিটা হয়ে যাক। চুক্তির তালিকা আসুক সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। ওরা সবাই (সিনিয়র) যদি লিখে দেয় আমরা কেউ জাতীয় দলের হয়ে খেলতে চাই না, আমি এখনই রাজি। তবে আমাকে অবশ্যই জানতে হবে। ট্যুরের আগে যেয়ে বললে হবে না। হঠাৎ করে সিরিজের আগে আওয়াজ শুনি একটা, এগুলো চাচ্ছি না। খেলতে না চাইলে আগেই বলতে হবে, সিরিজের আগে না। ওরা না খেললে আমাদের সময় লাগবে, আমি একটা বছর সময় চাই। একবছর পরে কাউকে লাগবেও না, কোন অসুবিধা নেই।'