চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম টেস্ট জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে মিরপুরে খেলতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ আগ্রাসন চালাচ্ছে মুমিনুল হকের দলের উপর। দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশকে ব্যাকফুটে ঠেলে চালকের আসনে ক্যারিবীয়রা।
প্রথম ইনিংসে ৪০৯ করা উইন্ডিজকে ব্যাটে ঠিকঠাক জবাব দিতে পারছে না বাংলাদেশ। উইকেট বিলিয়ে এসেছেন টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানরা। দ্বিতীয় দিন শেষে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১০৫ রান।৬ উইকেট হাতে রেখে ক্যারিবীয়দের চেয়ে বাংলাদেশ পিছিয়ে ৩০৪ রানে। ফলো-অন এড়াতে করতে হবে আরও ১০৫ রান।মুশফিকুর রহিম ২৭ ও মোহাম্মদ মিঠুন ৬ রানে অপরাজিত থেকে দিনের খেলা শেষ করেছেন। পড়ন্ত বিকেলে আর কোনো বিপদ ঘটেনি, এটাই বাংলাদেশের স্বস্তির জায়গা। দুই ব্যাটসম্যানের মধ্যে গড়ে ওঠা পঞ্চম উইকেট জুটি অবিচ্ছিন্ন ৩৫ রানে।
শুরুতেই বাজে শটে উইকেট বিলিয়ে আসেন সৌম্য সরকার (০)। শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের লেগ স্টাম্পের বাইরে পিচ করানো বল ফ্লিক করতে গিয়ে শর্ট লেগে ধরা পড়েন বাঁহাতি ওপেনার। রানের খাতা খোলার আগে ধরেন প্যাভিলিয়নের পথ।গ্যাব্রিয়েলের দ্বিতীয় শিকার নাজমুল হোসেন শান্ত। এ বাঁহাতি ৪ রান করে এনক্রুমা বোনারের হাতে ক্যাচ দেন। দলের সংগ্রহ তখন ১১ রান।তামিমের সঙ্গে জুটি গড়ে প্রতিরোধের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন অধিনায়ক মুমিনুল। রাকিম কর্নওয়ালের অফস্পিনে উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে ক্যাচ দেন তিনি। ২১ রানে থামতে হয়ে দলনেতাকে। ভাঙে ৫৮ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।
মুমিনুল ফেরার পর তামিমও আউট হয়ে যান। টাইগার ওপেনার আলঝারি জোসেফকে উইকেট দেন ফিফটির কাছে গিয়ে। তার ৫২ বলে ৪৪ রানের ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও একটি ছয়ের মার।৭১ রানে ৪ উইকেট হারানো দল শতরান পেরিয়েছে মুশফিক-মিঠুনের প্রতিরোধে। মিরপুর টেস্টের দ্বিতীয় দেন গেছে বোলারদের পক্ষেই। পুরোদিনে দুদলের পড়েছে ৯ উইকেট।উইন্ডিজের প্রথম ইনিংস শেষ হয় ৪০৯ রানে। দ্বিতীয় দিনের চা-বিরতির আগে গুটিয়ে যায় তারা। আবু জায়েদ রাহি ও তাইজুল ইসলাম নেন ৪টি করে উইকেট। একটি করে উইকেট নেন সৌম্য সরকার ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
সেঞ্চুরির খুব কাছে চলে গিয়েছিলেন উইন্ডিজের তিন ব্যাটসম্যান। কেউই পাননি তিনঅঙ্কের দেখা। সফরকারীদের ব্যাটিং ত্রয়ী যথেষ্ট ভয় ধরিয়েছিলেন। খুব বেশি ভয়ঙ্কর হওয়ার আগেই ফেরেন সাজঘরে।এনক্রুমা বোনার ৯০, জশুয়া ডি সিলভা ৯২ ও আলঝারি জোসেফ ৮২ রানে আউট হন। উইন্ডিজ অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট করেন ৪৭ রান।ক্যারিবীয়রা শেষ ২৫ রানে শেষ ৪ উইকেট হারালে অলআউট হয় চারশ পেরিয়ে। শেষে দ্রুত উইকেট নিতে না পারলে আরও রানের বোঝা নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামতে হতো তামিম-সৌম্যদের।চট্টগ্রামে অভিষেক টেস্টেই বোনার জাগিয়েছিলেন সেঞ্চুরির আশা। পারেননি অল্পের জন্য। ৮৬ রানে করে আউট হন। মিরপুর টেস্টে সেটির পুনরাবৃত্তি। সেঞ্চুরির আরও কাছে যাওয়া এ ব্যাটসম্যানকে ৯০ রানের মাথায় সাজঘরে পাঠান মিরাজ।
ভাঙেন ৮৮ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি। সপ্তম উইকেট জুটিও আরও বড় হয়। জশুয়া ও আলঝারি মিলে ১১৮ রান যোগ করেন। আলঝারিকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন আবু জায়েদ। পরে ফেরান জোমেল ওয়ারিকেনকে (২)।উইন্ডিজ ইনিংসের শেষ উইকেটটি নেন তাইজুল। শ্যানন গ্যাব্রিয়েলকে (৮) মিডঅনে মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ বানান বাঁহাতি স্পিনার।৫ উইকেটে ২২৩ রানে প্রথমদিন শেষ করেছিল ক্যারিবীয়রা। দ্বিতীয় দিন সবকটি উইকেট হারানোর আগে তারা যোগ করেছে আরও ১৮৬ রান। তাতে বোলাররা পেয়েছেন নির্ভার হয়ে লড়ার সুযোগ। উইকেট থেকে পেসাররা পাচ্ছেন সুবিধা। যা বাংলাদেশের জন্য ভীতিকর ব্যাপারই বটে!