গেলো বছর মার্চে করোনাকালীন বিরতির আগে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষের সেই ওয়ানডে সিরিজে অধিনায়কত্বের আর্মব্যাণ্ড ছিলো মাশরাফি বিন মোর্তজার হতেই। এবার ৩১৩ দিন পরে যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দেশের মাটিতেই রঙ্গিন পোশাকে মাঠে ফেরার অপেক্ষায় মাহমুদউল্লাহ্ রিয়াদ-তামিম ইকবালরা। কিন্তু রঙ্গিন পোশাকের সিরিজের স্কোয়াডে নেই মাশরাফি। তবে এটিকেই বাস্তবতা মানছেন সাকিব ।
অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন মাশরাফি। পরের বিশ্বকাপের কথা ভেবে নেতৃত্ব দেয়া হয় তামিমের কাঁধে। কিন্তু নতুন অধিনায়ক তাঁর প্রথম এসাইনমেন্টেই ছায়া হিসেবে পাবেন না সাবেক অধিনায়ককে।
চলতি মাসেই আবারো লাল সবুজ জার্সি গায়ে মাঠে নামার অপেক্ষায় আছেন সাকিব। কিন্তু ফিরে আসার মঞ্চে ড্রেসিং রুমে তাঁর সঙ্গে থাকবেন না মাশরাফি। অনেক কঠিন হলেও একেই বাস্তবতা মানছেন এই অলরাউন্ডার। যদিও বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে এই পেসারের পারফরম্যান্স আশা দেখাচ্ছে সাকিবকে।
আনুষ্ঠানিক অবসরের আগে পর্যন্ত যেকোন খেলোয়াড়ই পারফরম্যান্স দিয়ে নির্বাচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দলে ফিরতে পারেন বলে মত দেশসেরা এই অলরাউন্ডারের। এ প্রসঙ্গে সাকিব বলেন,' অনেক কঠিন একটা সময়। বাস্তুবতা এটাই। যেটা বললাম যেহেতু উনি নিজেকে এখনো এভেইলেবল রেখেছেন , কি হতে যাচ্ছে আপনি কখনোই জানবেন না।'
'টি-টোয়েন্টি উনি যখন খেললেন আমাদের সঙ্গে বেশ আশাজাগানীয়া পারফরম্যান্স ছিলো। তো স্বাভাবিকিভাবেই সামনে প্রিমিয়ার লিগ কিংবা আমাদের ঘরোয়া ওয়ানডে গুলো হয় এবং সেখানে যদি উনি ভালো করেন তাহলে তাকে নিয়ে নির্বাচকদের না ভাবার কোন কারণই নেই। যদিও অনেকসময় তারা মনে করে যে আমরা সামনের দিকে এগোতে চাই কিংবা। কিন্তু এই পরিস্থিতিগুলো সবসময় খোলা থাকে সব খেলোয়াড়ের জন্য যদি না সে নিজে থেকে অবসর গ্রহণ করে।'
অভিষেক টেস্টেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন পাকিস্তানি ক্রিকেটার ফাওয়াদ আলম। কিন্তু তখন আশানুরূপ পারফরম্যান্স না করতে পারায় ৫ টেস্টেই থমকে গিয়েছিলো ক্যারিয়ার। কিন্তু প্রায় এক দশক পরে ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরম্যান্স দিয়েই আবারো টেস্ট একাদশে ফিরেছেন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি ফিরেই হাঁকিয়েছেন সেঞ্চুরি। এই বাঁহাতির এমন প্রত্যাবর্তনকে যে কারো জন্যই অনুপ্রেরণাদায়ক ভাবছেন সাকিব।
তিনি আরো বলেন, 'আমি যদি পাকিস্তানের ফাওয়াদ আলমের উদাহরণটা দিই ওর প্রথম টেস্ট শতকের পরে দশ বছর পর দলে ফিরে দ্বিতীয় টেস্ট শতক। এটাও তো একটা বড়। কেউ তো স্বাভাবিকভাবে চিন্তাও করেনা যে সে আবারো কখনো দলে ফিরবে কিংবা খেলবে। তো সেই জায়গা থেকে যখন ও করতে পেরেছে আমি নিশ্চিত যে তাদের ভেতরে যদি এমন ইচ্ছা থাকে এবং এমন পারফম্যান্সটা হয় এমন দুইয়ে দুইয়ে চার মিলতেই পারে আবার।'
মাশরাফি একজন জাত যোদ্ধা। হার না মানা হাঁটুর জোরে তিনি উঠে দাঁড়িয়েছেন ও নিজেকে প্রমাণ করেছেন বারবার। তাই লাল সবুজ জার্সি গায়ে কলার উঁচিয়ে বল হাতে আবারো মাশরাফির দৌড় দেখার প্রত্যাশা করতেই পারেন সকলেই।