৬ বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন লিটন দাস ও সৌম্য সরকার। কিন্তু এখনো ধারাবাহিক হতে পারেননি কেউই, তাদের এমন ব্যর্থতায় দলও হচ্ছে ব্যর্থ। যদিও অধিনায়ক তামিম মনে করেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দেবেন লিটন-সৌম্য।
নিজেদের খারাপ অবস্থা কাটিয়ে উঠছিলেন লিটন-সৌম্যরা। করোনার আগে লিটন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ওয়ানডেতে পেয়েছিলেন দুই সেঞ্চুরি। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটা নিজের করে নিয়েছিলেন। এরপর টি-টোয়েন্টিতেও ওয়ানডে সিরিজের ফর্ম ধরে রেখেছিলেন। সৌম্য সরকারও ভালো ফর্মে ছিলেন সেই টি-টোয়েন্টি সিরিজে। কিন্তু করোনা এসে যেন লিটন-সৌম্যের ব্যাটিংটাই ভুলিয়ে দিল!
ওয়ানডেতে শেষ চার ইনিংসে সৌম্যর কোন হাফসেঞ্চুরি নেই। সর্বোচ্চ রান ৩২। অন্যদিকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দূর্দান্ত সিরিজ শেষে ৬টি ম্যাচ খেলেছেন লিটন। যেখানে তার সর্বোচ্চ রান ২২! স্বাভাবিক ভাবেই এই দুই ব্যাটসম্যানের ধারাবাহিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলো সংবাদ সম্মেলনে। তামিম অবশ্য আশার কথাই শুনিয়েছেন, ‘ আমি বিশ্বাস করি এ সিরিজে বাংলাদেশকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবে লিটন-সৌম্য। আমার ধারণা এ দুজনের অনেক বেশি সম্ভাবনা আছে, তাদেরকে এখন ডেলিভার করতে হবে। এটাও বলছি না, তারা কিছু করে নাই, কিছু তো করেছেই। তবে তাদের কাছ থেকে যদি আরও বড় কিছু আসে, এটা দলের জন্য এর থেকে ভাল কিছু হতে পারে না। ’
দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা পাকিস্তানের মতো দলের বিপক্ষে বিস্ফোরক ব্যাটিং করে দলের জয়ে ভূমিকা রেখেছিলেন সৌম্য। এমন বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের জন্যই সৌম্যকে নিয়ে প্রত্যাশা বেশি। অন্যদিকে টেকনিক্যাল দিক দিয়ে দারুন ব্যাটসম্যান লিটন। যেদিন খেলেন, প্রতিপক্ষের বোলারদের চোখের ঘুম হারাম হয়ে যায়। দুবাইতে ভারতের বিপক্ষে কিংবা টনটনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে লিটনের ইনিংস দুটি এমনই ছিলো। কিন্তু দুইজন দারুন ব্যাটসম্যান প্রায়ই হচ্ছেন ব্যর্থ। তামিম মনে করেন এই দুই ব্যাটসম্যান ছন্দে থাকলে, তার দলের জন্য সব কিছুই সহজ হয়ে যাবে, ‘আপনি-আমি সবাই জানি, সৌম্য-লিটন কেমন, যদি অমন দুই-একটা বড় পারফরম্যান্স এই সিরিজে পাই, তাহলে ম্যাচটা অনেক সহজ হয়ে যায় আরকি। ’
দুইজনের ধারাবাহিকতার অভাব কী মানসিক কোন বাঁধা কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তামিম বলেছেন, ‘ রবারই বলেছি যদি একটা ক্রিকেটারের চিন্তাধারায় ঘাটতি থাকে, তাহলে তাকে অনেক কিছু বলাটা বা বুঝানোটা সহজ। কিন্তু যখন আমি দেখি, অধিনায়ক হিসেবে, সতীর্থ হিসেবে- আমার ধারণা তারাও সেটা অনুভব করে। তখনতো তাদের বোঝানোর প্রয়োজন হয় না। তারা এটা জানে যে তারা ভুল করছে, তারা এটা বুঝতে পারে। আমি নিশ্চিত তারা এর থেকে বেরিয়ে আসবে। এখন যদি মুশফিকের মতো ধারাবাহিক পারফর্ম করা শুরু করে, তাহলে আমরা ওয়ানডেতে ঘরে-বাইরে দারুণ একটা দল হয়ে উঠতে পারব।’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ থেকে বাদ পড়েছেন নাজমুল হাসান শান্ত। মূলত ছন্দময় শান্তকে পেতেই টিম ম্যানেজমেন্ট এই সিরিজে তাকে বিশ্রাম দিয়েছে, ‘সে ৮-৯টা ওয়ানডে খেলেছে, দুর্ভাগ্যবশত যে পারফরম্যান্স তার কাছ থেকে আশা করেছি তা পাইনি। কিন্তু ব্যাক্তিগত ভাবে আমি , টিম ম্যানেজমেন্ট ও নির্বাচকরাও মনে করি যে শান্ত আমাদের ভবিষ্যত। একটা সিরিজে দলে না থাকায় সব শেষ হয়ে যায়নি। অধিনায়ক হিসেবে আমি মনে করি শান্তর দলকে দেয়ার এখনও অনেক কিছু আছে। হয়ত এখন এই ফরম্যাট থেকে তার একটু বিশ্রাম দরকার। এরপর ঘরোয়া ক্রিকেটে রান করুক এবং আবার দলে শক্ত ভাবে ফিkরে আসবে।’