প্রতিবারই 'বক্সিং ডে' টেস্ট দিয়ে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) বছর শেষ করে অস্ট্রেলিয়া। নতুন বছর শুরু করে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এসসিজি) টেস্ট ম্যাচ দিয়ে। তাঁদের ক্রিকেট ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছিলো এটি। কিন্তু সিডনির করোনা পরিস্থিতির কারণে ভাঙতে চলেছে এই ঐতিহ্য। আর বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির তৃতীয় ম্যাচ আয়োজনের জন্যও বিকল্প ভেন্যু হিসেবে ইতোমধ্যেই ঘোষণা করা হয়েছে এমসিজির নাম।
ভারতের বিপক্ষের টেস্ট সিরিজের শুরুতেই করোনা মহামারীর নতুন ঢেউ আছড়ে পড়েছে সিডনি শহরে। সেখান থেকে অ্যাডিলেডে ধারাভাষ্যকার হিসেবে যোগ দিলেও একারণেই ফেরত পাঠানো হয়েছিলো ব্রেট লিকে। তখন থেকেই তৃতীয় টেস্টের ভেন্যু পরিবর্তন নিয়ে কানাকানি শুরু হয়েছিলো। আর শুরু থেকেই সেই শহরের করোনা পরিস্থিতিকে আতশী কাচের নিচে রেখেছিলো ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)।
মহামারীর সময়ের এই গ্রীষ্মের সূচি তৈরী করতে অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি পরিশ্রম করতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিএ'র অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান নির্বাহী নিক হকলি। যেকোন সিদ্ধান্ত গ্রহণে সকলের সুস্থতা ও সুরক্ষার বিষয়টিই অগ্রাধিকার পাবে বলেও মত তাঁর। যদিও নিউ সাউথ ওয়েলসে নতুন সংক্রমনের সংখ্যা তুলনামূলক কম। কিন্তু পরিস্থির আবারো অবনতি হলে যেকোন সময় বিকল্প ভেন্যুতে স্থানাস্তরিত হবে ম্যাচটি বলেও জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে হকলি বলেন, 'বৈশ্বিক মহামারীর কারণে গ্রীষ্মের সূচি পরিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন করতে দলগত ভাবে অত্যধিক তৎপর হয়ে সমস্যা সমাধানে কাজ করতে হয়েছে। আগে কখনো এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। জড়িত প্রত্যেকের নিরাপত্তা এবং মঙ্গল আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার।'
'রেকর্ড পরীক্ষার সংখ্যা এবং এনএসডাব্লিউয়ের নতুন সংক্রমণের হ্রাসে আমরা আশাবাদী, তবে সিডনির পরিস্থিতি যদি অবনতি ঘটে তবে আমাদের আমাদের শক্তিশালী জরুরী পরিকল্পনা রয়েছে,' বলে তিনি যোগ করেন।
সূচি অনুযায়ী সিডনি তে তৃতীয় ম্যাচ অনুষ্ঠিত হলেও ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিতব্য শেষ টেস্ট আয়োজনে বিপাকে পরতে হবে সিএ কে। মেলবোর্ন থেকে ব্রিসবেনে ভ্রমণে কোন নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও সিডনি শহরের সঙ্গে সব সীমান্ত ইতোমধ্যেই বন্ধ করে দিয়েছে কুইন্সল্যান্ড সরকার। একই সঙ্গে তাদের প্রদেশে সেই শহর থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাও জারি হয়েছে। যদিও এই সমস্যা সমাধানে গঠনমূলকভাবে কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন হকলি।
১৯৯০ সালের পরে আর কখনো জানুয়ারি মাসে মেলবোর্নে টেস্ট আয়োজন হয়নি। সেই ম্যাচে অ্যালান বোর্ডারের নেতৃত্বে পাকিস্তানকে ৯২ রানে হারানোর সুখস্মৃতি রয়েছে তাঁদের। অপর দিকে ১৯৬৬-৬৭ সাল থেকে প্রতি জানুয়ারিতেই টেস্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে সিডনিতে। চলতি সফরের ভেন্যু পরিবর্তন হলে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ঐতিহ্যেও পরিবর্তন আসবে।