পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের নেওয়ার সিদ্ধান্তটা যে সঠিক ছিলো অধিনায়ক মুমিনুল হক সেটা প্রমাণ করে দিলেন। প্রথম ওভারেই সুরাঙ্গা লাকমলকে দুইটি চার মেরে শুরু করেন তামিম ইকবাল। দিন শেষে ৩০২ রানে ২ উইকেট হারিয়ে স্বাগতিকদের চোখ রাঙাছে বাংলাদেশ। প্রথম দিনের তিনটি সেশনই দাপট দেখিয়েছে মুমিনুলরা।
তামিমের আউটের পর ক্রিজে আসেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। তৃতীয় উইকেটে শান্তর সঙ্গে পার্টনারশিপ গড়ে দলকে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ২ উইকেট হারিয়ে ২০০ রানে দ্বিতীয় সেশনের খেলা শেষ করে বাংলাদেশ দল। শান্ত ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির পর ১২৬ রানে ও মুমিনুল অপরাজিত আছেন ৬৪ রান নিয়ে।দ্বিতীয় উইকেটের পর এবার তৃতীয় উইকেটে ১৫০ রানে জুটি গড়েছে বাংলাদেশ। এই জুটির কারিগর শান্ত-মুমিনুল। তৃতীয় উইকেটে সর্বোচ্চ ২৩৬ রানের জুটির রেকর্ড আছে বাংলাদেশের। এটি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই ২০১৮ সালে চট্টগ্রামে। সেবার কারিগর ছিলেন মুমিনুল-মুশফিক।
সাইফ হাসান ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই সাজঘরে ফেরায় শুরু থেকেই ব্যাটিংয়ে আসেন শান্ত। দেখে-শুনে ধীরে-সুস্থে ব্যাটিং করে তামিমকে সঙ্গ দিয়েছিলেন। গড়েছিলেন ১৪৪ রানের জুটি। প্রথম অর্ধশত রান করতে খেলেন ১২০ বল। তামিম আউট হলে মুমিনুলের সঙ্গে শতাধিক রানের জুটি গড়ে ২৩৫ বলে শান্ত ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন সেঞ্চুরির ইনিংসটি সাজিয়েছেন ১২টি চার ও ১টি ছয়ের মারে। এর আগে ৬টি টেস্ট খেলা শান্তর সর্বোচ্চ রান ছিল ৭১। তামিম নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে আউট হলেও শান্ত পথ হারাননি। তার লম্বা ইনিংসে বড় সংগ্রহের দিকে এগোচ্ছে বাংলাদেশ।
তামিম আউট হওয়ার পর ক্রিজে এসেছিলেন মুমিনুল । আগেই থিতু হওয়া শান্তকে সঙ্গ দেন দারুণ ভাবে। চা বিরতির আগে এই জুটি পূর্ণ করে ২০০। ইনিংসের ৫৩ ওভারের পঞ্চম বলে সিঙ্গেল নিয়ে ২০০ রান পূর্ণ করেন শান্ত। এই বাঁ হাতি ব্যাটসম্যানের সঙ্গে ক্রিজে আছেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। এর আগে তামিম-শান্তর দারুণ ব্যাটিংয়ে ২৩ ওভার তিন বল খেলে ১০০ রান করে বাংলাদেশ। এর পরেই দ্বিতীয় সেশনের খেলা শেষে চা বিরতিতে যায় দুই দল।এর আগে প্রথম সেশনে ২৭ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ১০৬ রান করেছিল সফরকারীরা। দ্বিতীয় সেশনে আসে ১ উইকেট হারিয়ে ৯৪ রান। আক্ষেপ হয়ে থাকবে নব্বইয়ের ঘরে তামিমের আউট হওয়া।
তামিম আউট হয়ে গেলেও শান্তর ব্যাটিংয়ে কোনো প্রভাব পড়েনি। নতুন ব্যাটসম্যান মুমিনুল হককে সঙ্গে নিয়ে এগোচ্ছেন সামনের দিকে। সিঙ্গেলস-ডাবলসের সঙ্গে হাঁকাচ্ছেন দৃষ্টিনন্দন বাউন্ডারি। মুমিনুলও খেলছেন স্বাভাবিক খেলা।সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ১০ রান দূরে থেকে সাজঘরে ফেরেন তামিম। তিনি ১০১ বলে ৯০ রান করে বিশ্ব ফার্নান্দোর এক্সটা বাউন্স বলে স্লিপে থিরামান্নের হাতে ক্যাচ তুলে দেন। নার্ভাস নব্বইয়ে গিয়ে ব্যর্থ হলেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। ইনিংসের প্রথম ওভারে সুরাঙ্গা লাকমালের বলে মিডউইকেটে দৃষ্টিনন্দন শটে চার মেরে রানের খাতা খোলেন তামিম, এক বল ডট দিয়ে আবারো চার। এবার স্কয়ার লেগে। এভাবেই আগ্রাসী শুরু করে লঙ্কান বোলারদের মনোবলে আঘাত করেন। দ্বিতীয় ওভারেই সাইফ আউট হলেও তামিম ক্ষান্ত হননি; তিনি তার খেলা চালিয়ে যান সহজাত ভঙ্গিমায়।
নতুন ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে গড়ে তোলেন দারুণ জুটি। শান্তও সঙ্গ দেন দক্ষ ব্যাটসম্যানের মতোই। তামিম ক্যারিয়ারের হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন ৫২ বলে। এগোচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে; কিন্ত পারলেন না। তামিম সর্বশেষ শতক হাঁকিয়েছিলেন ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে। তার ১০১ বলের ইনিংসটি সাজানো ছিল ১৫টি চারের মারে।