করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিনের ছুটিতে চলে গিয়েছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট। একক অনুশীলন দিয়ে গত ১৯ জুলাই থেকে মাঠে ফিরতে শুরু করেন ক্রিকেটাররা। এরপর তিন দলের বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপ শেষে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ আয়োজন করেছে বিসিবি। অনেক ক্রিকেটারই মাঠের লড়াইয়ে ব্যস্ত, কিন্তু কোথাও ছিলেন না মাশরাফি বিন মুর্তজা।
অবশেষে মাঠে দেখা গেল বাংলাদেশের সফলতম ওয়ানডে অধিনায়ককে। দীর্ঘ ৯ মাস পর মঙ্গলবার মিরপুরের একাডেমি মাঠে অনুশীলনে দেখা গেল মাশরাফিকে। এদিন একাডেমি মাঠে রানিং ও বোলিং করেছেন তিনি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ট্রেইনার তুষার কান্তি হাওলাদারের তত্ত্বাবধানে ৫ ওভার বোলিং করেন মাশরাফি। বোলিংয়ের আগে ও পরে রানিং করা মাশরাফি পরে জিমেও সময় কাটান।
বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের পাঁচ দলের ক্রিকেটার, কোচিং স্টাফদের জৈব সুরক্ষা বলয়ে রাখা হয়েছে। সব দল মিরপুরের একাডেমি মাঠেই অনুশীলন করে। তাই এই মাঠে অনুশীলন করতে প্রথমে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিতে হয়েছে মাশরাফির। এরপর বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্সের অনুমতি নিয়ে মাঠে আসেন তিনি। এ ছাড়া সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে এককভাবে অনুশীলন করেন অভিজ্ঞ এই পেসার।
মাশরাফি সর্বশেষ আন্তর্জাতিক মাচ খেলেন গত মার্চে। ওই সিরিজেই ওয়ানডের অধিনায়কত্ব ছাড়েন তিনি। এরপর মার্চে শেষ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের হয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে একটি ম্যাচ খেলেন মাশরাফি। ওই ম্যাচটি ছিল বিকেএসপিতে। সেই হিসেবে মিরপুরে তার খেলা সর্বশেষ ম্যাচ গত জানুয়ারিতে বিপিএলে, ঢাকা প্লাটুনের হয়ে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে খেলেছিলেন মাশরাফি।
এরপর অবশ্য মিরপুরে অনুশীলন করেছেন বাংলাদেশের সাবেক এই ওয়ানডে অধিনায়ক। শেখ জামালের হয়ে ঢাকার প্রিমিয়ার লিগ খেলার আগে মিরপুরে অনুশীলন করেন তিনি। একটি ম্যাচ খেলার পর করোনাভাইরাসের কারণে দেশের সব ধরনের ক্রিকেট স্থগিত হয়ে যায়। দীর্ঘ বিরতির পর জুলাইয়ে অন্যান্য ক্রিকেটাররা একক অনুশীলনে ফিরলেও মাশরাফি অনুশীলন করেননি।করোনাকালীন কঠিন সময়ই পার করতে হয়েছে তাকে। পরিবারের প্রথম সদস্য হিসেবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন মাশরাফি। করোনামুক্ত হতে তার ২০ দিনের মতো সময় লেগে যায়। মাশরাফি ছাড়াও তার স্ত্রী-সন্তান, বাবা-মা, ছোট ভাই করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।
ফিটনেসের কারণে নিজে থেকেই বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপে না খেলার সিদ্ধান্ত নেন মাশরাফি। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ দিয়ে ফেরার কথা ছিল তার। এই টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে মাস খানেক আগে থেকে অনুশীলন শুরু করেন ডানহাতি এই পেসার। কিন্তু অনুশীলনে রানিংয়ের সময় হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পান তিনি। এরপর থেকে বিশ্রামে ছিলেন মাশরাফি। চোট কাটিয়ে আবারও মাঠের লড়াইয়ে ফেরার প্রস্তুতি শুরু করলেন মাশরাফি।
ফিট হলেই যে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে তার খেলার সুযোগ হবে, তেমন নয়। কারণ বিসিবির বেধে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটা দল ১৬জন করে ক্রিকেটার দলে ভিড়িয়েছে। কেউ ইনজুরিতে পড়লে তার বিকল্প হিসেবে মাশরাফিকে দলে নিতে পারবে কোনো দল।এদিক থেকে মাশরাফির খেলার দুয়ার খুলেছে মুমিনুল হকের ইনজুরির কারণে। ডানহাতের আঙুলে চোট পেয়ে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেছেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক। তার জায়গায় চট্টগ্রাম মাশরাফিকে নিতে পারবে। যদিও মাশরাফিকে নেওয়ার ব্যাপারে এখনও কিছু জানায়নি দলটি। ব্যাপারটি এখনও সম্ভাবনার পর্যায়েই আছে।