গত ১৩ ডিসেম্বর রাতে জেমকন খুলনার পেসার শহীদুল ইসলামের বাবা মারা যান। খবর পেয়ে রাতেই হোটেল ছেড়ে নিজের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে যান শহীদুল। এক সপ্তাহ হয়নি, বাবা নেই। বটবৃক্ষকে হারানো শহীদুল মৃত্যুশোক ভুলে খুলনার জয়ের নায়ক। নিজের শেষ ওভারে চট্টগ্রামের প্রয়োজনীয় ১৬ রান আটকে দেন শহীদুল। আর তাতেই বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে চ্যাম্পিয়ন হয় জেমকন খুলনা।
খুলনার হয়ে সবগুলো ম্যাচই খেলেছেন শহীদুল। বাবার মৃত্যুর কারনে কেবল প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচটি খেলতে পারেননি। গত বুধবার খুলনার টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করে ম্যাচ খেলার আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি নিজেই। টিম ম্যানেজমেন্টও তার কথায় সাড়া দিয়ে করোনা টেস্টে করিয়ে দলের সঙ্গে যুক্ত করে। শহীদুল এক কথার প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘বাবাকে হারিয়েছি, এই শোকতো আর ভোলা যাবে না। আমি বিশ্বাস করি, বাবা আমাকে খেলতে দেখলেই খুশি হবেন।’ শহীদুলের এমন আবেগি কথামালাতেই সীমাবদ্ধ ছিলেন না। মাঠে দেখিয়েছেন কিভাবে শোককে, শক্তিতে পরিণত করতে হয়।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য চট্টগ্রামের প্রয়োজন ছিল ১৬ রানের। ক্রিজে মোসাদ্দেক-সৈকত আলীর মতো ব্যাটসম্যান। তবুও ভড়কে যাননি শহিদুল। ঠান্ডা মাথায় বোলিং করে গেলেন। প্রথম ৫ বলে দুই উইকেট নিয়ে দিলেন মাত্র ৪ রান। ১ বলে চট্টগ্রামের জিততে প্রয়োজন ১২ রান। শেষ বলটি কিছুটা ফুলটস করলেন, নাহিদুল বিশাল এক ছক্কা হাকালের। তবুও ম্যাচ খুলনার। শহীদুলের ওমন ওভারটিতেই মূলত ম্যাচ জেতে খুলনা। ব্যাটিংয়ে ৭০ রানের ইনিংস খেলা মাহমুদউল্লাহর অবদান যতখানি, ঠিক ততোখানিই শহীদুলের ওভারটি। ৪ ওভারের কোটা পূরণ করে শহীদুল ৩৩ রান খরচায় তুলে নিয়েছেন দুটি উইকেট।বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের ফাইনাল জিতে মাশরাফিতো পুরো কৃতিত্বই দিলেন শহীদুলকে। পুরষ্কার বিতরণী মঞ্চে তিনি বলেছেন, ‘কয়দিন আগে ওর বাবা মারা গেছে। ওমন একটি শোক ভুলে এভাবে পারফরম্যান্স করাটা অনেক কঠিন। ও জৈব সুরক্ষা বলয়ের বাইরে চলে গিয়েছিল। আবার এসেছে, এসে দারুন বোলিং করলো। আমরা আসরে ওর জন্যই ম্যাচটি জিতেছি।’