এলেন, দেখলেন, জয় করলেন’-ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ফেরার ম্যাচে এম সাকিবকেই পাওয়া গেছে। বুধবার ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছেন সাকিব। লর্ডসে পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ওয়ানডে খেলেছিলেন সাকিব। দীর্ঘ বিরতির পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেও সাকিবের পারফরম্যান্সে ভাটা পড়েনি। বিশ্বকাপে ব্যাট ও বলের তাক লাগানো পারফরম্যান্সই ফিরে এলো মিরপুরে! ৭.২ ওভারে ৮ রান খরচায় সাকিবের শিকার ৪ উইকেট।
২০১৯ বিশ্বকাপে ৮ ইনিংসে ২ সেঞ্চুরি ও ৫ হাফসেঞ্চুরিতে ৬০৬ রান করেছেন এই পজিশনে। ব্যাটিং গড় ছিল ৮৬.৫৭। ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের বিশ্বকাপের তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও তিনি। বিশ্বকাপের পর প্রায় দেড় বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছেন তিনি। ফিরেই এমন পারফরম্যান্স করে দারুণ খুশি সাকিব। প্রথম ইনিংসে শেষে সাকিব ভারাভাষ্যকারকে জানিয়েছেন নিজের সাফল্যের রহস্য, ‘খুব সাধারণ পরিকল্পনা ছিলো। লাইন-লেন্থ্য মেনে সঠিক জায়গাতে বোলিং করেছি। উইকেটেরও কিছুটা সহায়তা ছিল।’
যদিও লম্বা বিরতির পর এভাবে পারফরম্যান্স করাটা মোটেও সহজ নয়। সাকিব জানালেন, ‘ভালো লাগছে, ভালো করেছি। কিন্তু ১৬/১৭ মাস পর খেলতে নামাটা খুব সহজ নয়। তবে ভালো লাগছে পারফরম্যান্স করতে পেরে। আমরা দশ মাস কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেনি। প্রত্যেকেই কিছুটা নার্ভাস ছিল। তারপরও আমরা ম্যাচ খেলার রোমাঞ্চে ছিলাম।’ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সাকিবের ফেরার ম্যাচটি বাংলাদেশেও বিরতি কাটানোর ম্যাচ। করোনার কারনে প্রায় ১০ মাস আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে ছিল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। লম্বা বিরতি কাটিয়ে ফেরা এমন একটি ম্যাচে ক্যারিবিয় ব্যাটসম্যানদের কোন সুযোগই দেয়নি বাংলাদেশের বোলাররা। বিশেষ করে মোস্তাফিজ, সাকিব ও অভিষিক্ত হাসান মাহমুদও প্রতিপক্ষের জন্য ত্রাস হয়ে উঠেন।
তবে সব কিছু ছাপিয়ে সাকিবের দিকেই নজর ছিল সবচেয়ে বেশি। গত অক্টোবরে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা সাকিব আল হাসান বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ দিয়ে মাঠে ফিরেছিলেন। কিন্তু ব্যাটিং-বোলিংয়ে কিছুই করতে পারেননি তিনি। ফলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিবের ফেরাটা কেমন হয়, সেটি দেখার অপেক্ষায় ছিলেন অনেকে। ঘরোয়া ক্রিকেটে ব্যর্থ হলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেই সাকিব নিজের অস্বিস্ত বেশ ভালো করেই জানান দিয়েছেন।বুধবার সাকিবের ঘূর্ণির সামনে দাঁড়াতেই পারেনি ক্যারিবিয় ব্যাটসম্যানরা। প্রথম স্পেলে ৭ ওভার বোলিং করে ২ মেডেনে ৮ রান খরচায় তিন উইকেট নিয়েছেন তিনি। দ্বিতীয় স্পেলে ২ বল করে এক উইকেট নেন এই অলরাউন্ডার। সবমিলিয়ে ৭.২ ওভার বোলিং করে ৮ রান খরচায় চার উইকেট নিয়ে নিজের প্রত্যাবর্তন ম্যাচটি রাঙ্গিয়ে তুলেছেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার।
সাকিবের প্রথম শিকার আন্দ্রে ম্যাকার্থি। ক্যারিবিয় এই ব্যাটসম্যান সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হন, আর তাতেই সাকিব ঘরের মাঠে ১৫০ তম উইকেটের মালিক হন। সাকিবের তৃতীয় ওভারে স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক জেসন মোহাম্মদ। পরের ওভারেই সাকিবের তৃতীয় শিকার এনক্রুমাহ বোনার। ক্যারিবিয়ান অভিষিক্ত এই অলরাউন্ডারকে রানের খাতা খোলার সুযোগ না দিয়ে, লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে সাজঘরে ফেরান সাকিব। এরপর আরও তিন ওভার করে কোন সাফল্য পাননি সাকিব। পরে দ্বিতীয় স্পেলে এসেই শেষ উইকেট হিসেবে তুলে নেন আলজারি জোসেফকে।