জয়ের ফিরেছে জেমকন খুলনা। টানা দুই ম্যাচ হারের পর সোমবার বেক্সিমকো ঢাকার বিপক্ষে ৩৭ রানের জয় পেয়েছেন মাহমুদউল্লাহর দল। খুলনার এমন জয়ে সবচেয়ে বেশি অবদান শুভাগত হোমের। ব্যাটিয়ে ৫ বলে ১৫ রান করার পর বোলিংয়ে পেয়েছেন সাফল্য। এদিকে ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ হওয়া সাকিব বল হাতে ফিরেছেন স্বরূপে। ৪ ওভারে দুই মেডেনে ৮ রান খরচায় নিয়েছেন একটি উইকেট নিয়ে দলের জয়ে অবদান রেখেছেন তিনিও।
১৪৭ রানের সহজ লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় ঢাকা। পর পর দুই ওভারে শুভাগত ও সাকিবের ঘূর্ণির কাছে পরাস্ত হয়ে সাজঘেরে ফেরেন দুই ওপেনার তানজিদ (৪) ও নাঈম শেখ (১)। এরপর মুশফিক ও রবিউল মিলে সাকিবকে দুই ওভার মেডেন দিয়ে আস্কিং রেট বাড়িয়ে ফেলেন। টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি মেডেন পেয়েছেন সুনীল নারায়ইন। ক্যারিবিয়ান এই স্পিনার ২৪টি মেডেন নিয়েছেন কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে। সাকিব ২১টি মেডেন নিয়ে যৌথভাবে দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন স্যামুয়েল বদ্রির সঙ্গে।
টুর্নামেন্টে প্রথমবার সুযোগ পাওয়া রবিউল ইসলাম সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি। প্রথম সুযোগ ৯ বলে ৪ রানে আউট হয়ে, হয়েছেন ব্যর্থ। চতুর্থ উইকেট ইয়াসির আলীকে সঙ্গে নিয়ে মুশফিক দলের পরাজয় ঠেকাতে চেষ্টা চালান। দুই জনের জুটিতে যোগ হয় ৫৭ রান। ব্যক্তিগত ২১ রানে হাসান মুরাদের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন ইয়াসির। সঙ্গীকে হারিয়ে যেন নিজেকেও হারালের মুশফিক। শুভগত হোমের একটি বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে আউট দলের অধিনায়ক। আউট হওয়ার আগে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৭ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। মুশফিকের বিদায়েই মূলত জয়ের আশা ফিকে হয় যায় ঢাকার। মুশফিক ও ইয়াসির ছাড়া কেউই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি। শুভাগত ও সাকিবের ঘূর্ণির কবলে পরে শেষ পর্যন্ত ১৯.২ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১০৯ রানে অলআউট হয় ঢাকা।
টুর্নামেন্টে প্রথমবার সুযোগ পাওয়া শুভাগত ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যান মুশফিকের পাশাপাশি ওপেনার তানজিদ তামিম ও শফিকুলের উইকেটও নেন তিনি। সবমিলিয়ে ৩.২ ওভারে ১৩ রান খরচায় তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরার পুরষ্কারটি নিজের করে নেন মুশফিক। সাকিব ৮ রানে নেন দুটি উইকেট। এছাড়া শহিদুল ইসলাম ৩০ রানে তিনটি এবং হাসান মুরাদ ২২ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন।এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পায় জেমকন খুলনার। অধিনায়কের ৪৫ রানে ভর দিয়ে লড়াই করার মতো স্কোর পেয়েছে খুলনা। তাতে অবশ্য বেক্সিমকো ঢাকার ভূমিকাও রয়েছে! পুরো ইনিংসে তিনটি ক্যাচ ছেড়েছেন নাঈম-আকররা। পাশাপাশি মিস ফিল্ডিং তো ছিলই। ঢাকার ফিল্ডারদের পাশে রেখে খুলনা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৬ রান সংগ্রহ করে।
বোলিংয়ে সফল হলেও ব্যাট হাতে আজও ব্যর্থ হয়েছেন সাকিব। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা এই অলরাউন্ডার নতুন পজিশন ওপেনিংয়ে মানিয়ে নিতে পারছেন না নিজেকে। আক্রমণাত্মক শুরুতে ভালো কিছু ইঙ্গিত দিলেও খুলনা তারকাকে থামতে হয়েছে মাত্র ১১ রানে। তাকে বিদায় করা রুবেল হোসেন বল হাতে ছিলেন দুর্দান্ত। আগের দুই ম্যাচে নিজের ছায়া হয়ে থাকা এই পেসার ২৮ রানে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে ঢাকার সেরা।আগের তিন ম্যাচের ধারাবাহিকতায় আজও (সোমবার) শুরুতেই ভেঙে পড়ে খুলনার টপ অর্ডার। নাসুম আহমেদের বলে এনামুল হক (৫) বোল্ড হলে হারায় প্রথম উইকেট। খানিক পর রুবেলের দারুণ এক ডেলিভারিতে স্টাম্প উপড়ে যায় সাকিবের। ওপেনার হিসেবে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলা এই অলরাউন্ডার ৯ বলে ১১ রান করে আউট হয়েছেন। ইমরুল কায়েসকে এক ধাপ পিছিয়ে জহুরুল ইসলামকে ওয়ান ডাউনে আনলেও পরিস্থিতি পাল্টায়নি। জহুরুল আউট ৪ রানে।
৩০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া খুলনাকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন ইমরুল-মাহমুদউল্লাহ। চতুর্থ উইকেটে দুজন যোগ করেন ৫৬ রান। ইমরুল ২৭ বলে ৪ বান্ডারিতে ২৯ রান করে আউট হন। মাহমুদউল্লাহ ৪৭ বলে ৩ চারে ৪৫ রান করে ইনিংসের শেষ ওভারে আউট হন।এছাড়া ১১ বলে ১৯ রান এসেছে আরিফুলের ব্যাট। দলের স্কোর ১৫০-এর কাছাকাছি যেতে অবদান রেখেছেন প্রথমবার সুযোগ পাওয়া শুভাগত হোম। ৫ বলে ১ চার ও ১ ছক্কায় খেলেছেন ১৫ রানের ইনিংস।বল হাতে দারুণ দিন কাটিয়েছেন রুবেল। সাকিব ছাড়াও মাহমুদউল্লাহ ও আরিফুল তার শিকার। গুরুত্বপূর্ণ ৩ উইকেট পেতে ৪ ওভারে তার খরচ ২৮ রান। এছাড়া শফিকুল ইসলাম ৩৪ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট।