My Sports App Download
500 MB Free on Subscription


১৩ ইনিংস ধরে আক্ষেপ, অপেক্ষায় তামিম!

সাদা পোষাকে দারুন সময় কাটাচ্ছেন তামিম ইকবাল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ টেস্টে হাফসেঞ্চুরি পেয়েছিলেন। এরপর ক্যান্ডিতে প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসেই পেয়েছেন হাফসেঞ্চুরি। আজও হাফসেঞ্চুরি করেই সাজঘরে ফিরেছেন। সবমিলিয়ে টানা চারটি হাফসেঞ্চুরি পেলেও কোনটাকেই সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে পারেননি এই ওপেনার। শনিবার প্রথম ওভার থেকেই আগ্রাসী ভূমিকা ব্যাটিং শুরু করেন তামিম। স্কোরবোর্ডে যখন বাংলাদেশের রান ৮৬, সেখানে তামিমের ব্যক্তিগত স্কোরই ৭৯ বলে ৬৫। বোঝাই যাচ্ছে শুরু থেকেই কতটা আগ্রাসী ছিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। ওয়ানডে ক্রিকেটে কিছুটা ধীরস্থির ব্যাটিং করলেও এই ফরম্যাটে ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং উপভোগ করেন তিনি। লঙ্কানদের বোলারদের শাসন করে নিজের হাফসেঞ্চুরির সঙ্গে দলের রানও বাড়িয়ে নিয়েছেন।

৫৭ বলে পাওয়া হাফ সেঞ্চুরি সেঞ্চুরিতে রূপ দেওয়ার পথেই ছিলেন তামিম। কিন্তু প্রথম টেস্টের মতো দ্বিতীয় টেস্টেও ৯০ এর ঘরে গিয়ে পথ ভুললেন বাঁহাতি ওপেনার। আবার তিনি নার্ভাস নাইন্টিজের শিকার। এর আগে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসেও বৃষ্টি বাঁধায় সেঞ্চুরির সুযোগ হাতছাড়া করেন তামিম! পরিসংখ্যান অনুযায়ি ওয়ানডে ও টেস্ট মিলিয়ে মোট ছয়বার তামিম আউট হয়েছেন ৯০ এর ঘরে। এর আগে সাদা পোষাকে ২০১৩ সালে ঢাকায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে করেছিলেন ৯৫। বাকি তিনটা ওয়ানডেতে। ২০১০ সালে জিম্বাবুয়ে, ২০১৫ বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে এবং ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তামিম আউট ৫ রানের আক্ষেপ নিয়ে।সব মিলিয়ে গত ২ বছরে ১৩ ইনিংস ধরে সেঞ্চুরির দেখা নেই তামিমের ব্যাটে। শনিবার শুরুর তামিমের সঙ্গে শেষের তামিমের বিস্তর ফারাক। ৮০ রান হতেই তামিমকে দেখা গেছে নার্ভাস ব্যাটিংয়ে। বেশ কয়েকবার ব্যাটিং করতে গিয়ে লাইন মিস করেছেন, দিয়েছেন হাফচান্সও। শেষ পর্যন্ত অবশ্য নবীন স্পিনার প্রবীণ জয়াবিক্রমার কাছেই পরাস্ত হন তামিম। তার ঘূর্ণি একটি বল রক্ষণাত্মক ভঙ্গিমাতেই খেলছিলেন। কিন্তু বলটি তামিমের ব্যাট ছুয়ে চলে যায় স্লিপে দাঁড়ানো লাহিরু থিরিমানের হাতে। আর তাতেই শেষ হয় তামিমের দূর্দান্ত একটি ইনিংস।

সবমিলিয়ে ১৫০ বলে ৯২ রান আসে তামিমের ব্যাট থেকে। যেখানে আছে ১২ টি চারের মার। এদিন এই ইনিংস খেলার পথে আরেকটি মাইলফলক স্পর্শ করেছেন তামিম। হাফসেঞ্চুরির পথে সাত বাউন্ডারি মেরে চারের মাধ্যমে পৌঁছে যান ৬০০ চারের চূড়ায়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চার (৫৫৪) এসেছে মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে।গত ১৩ ইনিংসে তামিমের ৬টি ইনিংসেই আছে হাফসেঞ্চুরি। যার মধ্যে ৫ বার ৭০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তামিম। কিন্তু দূর্ভাগ্য যার একটিকেও সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে পারেননি এই ওপেনার। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এর সাতটি হাফসেঞ্চুরি থাকলেও সেঞ্চুরির নেই একটিও। বাংলাদেশের সেরা ওপেনার তামিমের সেবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ৬ ম্যাচে ইংলিশদের বিপক্ষে সেঞ্চুরি তিনটি। ম্যানচেস্টারের ২০১০ সালে স্বাগতিকদের বিপক্ষে পর পর দুই টেস্টেই সেঞ্চুরির দেখা পান তামিম। সমান সংখ্যক ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেঞ্চুরি দুটি। এছাড়া ভারত, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি করে সেঞ্চুরি আছে তামিমের। এখন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরির দেখা পাননি তামিম। 

তামিমের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসটি পাকিস্তানের বিপক্ষে। ২০১৫ সালে খুলনা টেস্টে একমাত্র ডাবল সেঞ্চুরিটি পান তামিম। ৪৪৮ মিনিট ক্রিজে থেকে ২৭৮ বলে ২০৬ রানের ইনিংসটি খেলেছিলেন ড্যাশিং এই ওপেনার।ক্যান্ডি টেস্টে তিন তিনবার একে অন্যকে ছাড়িয়ে গেছেন মুশফিকুর রহিম ও তামিম ইকবাল। গত কয়েকটি সিরিজ ধরেই বাংলাদেশের এই দুই ক্রিকেটারের মধ্যে দেশের হয়ে টেস্টের শীর্ষ রান সংগ্রাহকের লড়াই চলছে।গত দেড় বছরে টেস্ট ক্রিকেট বাংলাদেশের শীর্ষ রান সংগ্রাহকের লড়াইটা হচ্ছে তামিম ও মুশফিকের মধ্যে এই সময়টাতে অন্তত ৬ বার মুশফিক-তামিমের মধ্যে টেস্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের শীর্ষস্থান বদল হয়েছে। ক্যান্ডিতে প্রথম টেস্টেই তিনদফা বদল হয়েছে তাদের অবস্থান। তবে শনিবারের আরও একটি হাফসেঞ্চুরি করে অনেকটাই এগিয়ে গেলেন তামিম। বাংলাদেশের সেরা এই ওপেনারের বর্তমান রান ৪ হাজার ৭৬৪।