ধারাভাষ্যকার, ক্রিকেটার, ব্রডকাস্টার এই সবগুলো নামই জড়িয়ে আছে রবিন জ্যাকম্যানের সঙ্গে। জাতীয় দলের হয়ে খুব বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ না পেলেও ঘরোয়া ক্রিকেটে ব্যাটসম্যানদের ত্রাস হয়ে ওঠেছিলেন ইংল্যান্ডের সাবেক এই পেসার। শুক্রবার কেপটাউনে ৭৫ বছর বয়সে মারা গেছেন ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে আলোচিত চরিত্রের জ্যাকম্যান।
জন্ম ভারতে হলেও বেড়ে ওঠা ইংল্যান্ডে। এই দুই দেশকে ছাপিয়ে তাঁর গভীর সম্পর্কটা দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে। মাঝে মাঝে অনেকে দ্বিধায় পড়েছেন তিনি কি আফ্রিকার নাকি ইংল্যান্ডের। শুরুর দিকে অভিনেতা হতে চাইলেও পরবর্তীতে ক্রিকেটের প্রেমে মজেছিলেন ১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া জ্যাকম্যান।
ক্রিকেটার হওয়ার লক্ষ্যে ১৯ বছর বয়সে স্বপ্নের সারে ক্রিকেট ক্লাবে ট্রায়াল দেন তিনি। তাতে টিকেও যান তিনি। এরপর হয়ে ওঠেন সারের পেস বিভাগের অন্যতম কাণ্ডারি। ঘরোয়া ক্রিকেটের দারুণ পারফরম্যান্স করে চলেছিলেন জ্যাকম্যান। এর ফলে ৩৫ বছর বয়সে বব উইলিসের ইনজুরিতে দলে ডাক পান তিনি।
যদিও অভিষেকের আগে বাধায় পড়তে হয়েছিল তাকে। তাঁর স্ত্রী দক্ষিণ আফ্রিকার হওয়ায় তাকে ভিসা দিতে আপত্তি জানিয়েছিল গায়ানা সরকার। কারণ ওই সময় বর্ণবাদ নীতি কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। পরবর্তীতে দ্বিতীয় টেস্টটি সরিয়ে আনা হয়েছিল বার্বোডোসে। এরপর ১৯৮১ সালে মার্চে অভিষেকও হয় তাঁর। অভিষেকটা দারুণভাবে রাঙিয়ে রাখেন এই পেসার।
ক্যারিয়ানদের বিপক্ষে নিজের প্রথম টেস্টেই নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। যেখানে ছিল গর্ডন গ্রিনিজ, ডেসমন্ড হেইন্স ও ক্লাইভ লয়েডের মতো ক্রিকেটারের উইকেট। এরপর ধারাভাষ্যকার হিসেবে দারুণ পরিচিতি পেয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে কণ্ঠনালীর সমস্যা হওয়ায় কাজ করেছেন ব্রডকাস্টার হিসেবে।
জাতীয় দলের হয়ে মাত্র ৪ টেস্ট খেলে নিয়েছেন ১৪ উইকেট। আর ১৫ ওয়ানডে খেলে নিয়েছেন ১৯টি উইকেট। ঘরোয়া ক্রিকেটে ৩৯৯ ম্যাচে নিয়েছেন ১৪০২ উইকেট। এর মধ্যে সারের হয়েই নিয়েছেন ১২০৬ উইকেট। এছাড়া লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ২৮৮ ম্যাচে ৪৩৯ উইকেট আছে তাঁর। ব্যাট হাতে করেছেন সাড়ে ৫ হাজারের মতো রান।