২০১৫ সালে তরুণ মোস্তাফিজের বোলিং দেখেই ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন শরিফুল। সেই মোস্তাফিজের সঙ্গেই আজ ম্যাচ খেলছেন দীর্ঘদেহী এই পেসার। ৭ বছরের ব্যবধানে নিজের প্রিয় ক্রিকেটার মোস্তাফিজের সঙ্গে শরিফুলও দেশের জার্সিতে মাঠে।
অনেকটা কঠিন পথ পাড়ি দিয়েই জাতীয় দলে সুযোগ করে নিয়েছেন পঞ্চগড়ের কৃষক-সন্তান শরিফুল ইসলাম। দক্ষিণ আফ্রিকায় যুববিশ্বকাপ মাতিয়ে আসার পর খুব বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়নি শরিফুলকে। জায়গা করে নিয়েছিলেন ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ওয়ানডে দলে। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে অভিষেক না হলেও ২ মাসের ব্যবধানে হয়ে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে অভিষেক হলো শরিফুলের।
শরিফুল ২০১৬ সালের জেএসসি পরীক্ষায় কৃতকার্য হতে পারেননি। এই ব্যর্থতাই তার জন্য শাপেবর হয়ে আসে শেষ পর্যন্ত। 'লেখাপড়ায় দুর্বল' ভাগ্নেকে দিনাজপুরের এক ক্রিকেট একাডেমিতে ভর্তি করে দেন শরিফুলের মামা। সেখানে তার ওপর চোখ পড়ে রাজশাহীর কোচ আলমগীর কবিরের। সেখানে থেকেই শুরু। এরপর তো অনূর্ধ্ব-১৯ দলের প্রধান পেসার হয়ে বিশ্বকাপই মাতিয়েছেন।
পঞ্চগড়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষক বাবার ঘরে জন্ম শরিফুল ইসলামের। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় এরকম পরিবারের সন্তানদের ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখা একটু বাড়াবাড়িই । তারপরও স্বপ্নটা দেখেছিলেন দীর্ঘদেহী শরিফুল। আর তাতে বিস্ময়করভাবে বাবা দুলাল মিয়ার সায়ও পেয়ে যান । স্বপ্ন এবং তাতে বাবার সমর্থন; এই দুই মিলে শরিফুলের পথটা মসৃণ হতে তেমন সময় লাগেনি।
২০১৫ সালে মোস্তাফিজুর রহমান যখন মিরপুরে ভারতের বিপক্ষে একের পর এক উইকেট নিয়ে নিস্তব্ধ করে দিচ্ছিলেন প্রতিবেশি দেশের শতকোটি ক্রিকেটপ্রেমীকে, শরিফুলের চোখ তখন ছিলো টেলিভিশনের পর্দায়। মোস্তাফিজের বোলিং-বীরত্ব দেখেন পেসার হওয়ার স্বপ্নটা উঁকে দেয় শরিফুলের হৃদয়ে। গ্রামে বিদ্যুৎ নেই, টেলিভিশন নেই। মোস্তাফিজের সেই বোলিং-বীরত্ব শরিফুল দেখেছিলেন বাড়ি থেকে ২০ মিনিট দূরের মউমারি বাজারের এক দোকানে।বিশ্বকাপজয়ী দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য শরিফুলের রঙ্গিন পোষাকের অভিষেকটা অবশ্য রঙ্গিন হয়নি। এই ফরম্যাটে ২২ টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। দুইবার খুলনা টাইটানসের হয়ে বিপিএলও খেলেছেন তরুণ এই পেসার।